পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

স্বরূপ গুজরাটের সামন্ত-পদে স্থাপন করিয়াছিলেন[১]। তৃতীয় গোবিন্দ কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়া গুর্জ্জর-রাজগণ কিছুকাল শান্তভাবে জীবন-যাত্রা নির্ব্বাহ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। নাগভট আর কখনও উত্তরাপথে প্রবেশলাভ করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না এবং তাঁহার পুত্র রামভদ্র কখনও আর্য্যাবর্ত্ত-অধিকারের উদ্যম করেন নাই।

 তৃতীয় গোবিন্দ দক্ষিণাপথে প্রত্যাবর্ত্তন করিলে চক্রায়ুধ বোধ হয়, ধর্ম্মপালের সামন্তরূপে কান্যকুব্জ-রাজ্য শাসন করিয়াছিলেন এবং ধর্ম্মপাল আজীবন সমগ্র উত্তরাপথের মণ্ডলেশ্বর-পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুঙ্গেরে আবিষ্কৃত দেবপালদেবের তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, “দিগ্বিজয়প্রবৃত্ত সেই নরপতির (ধর্ম্মপালের) ভৃত্যবর্গ কেদারতীর্থে যথাবিধি জলক্রিয়া সম্পন্ন করিয়াছিলেন এবং গঙ্গাসাগরসঙ্গমে, তথা গোকর্ণ প্রভৃতি তীর্থেও ধর্ম্ম্যকর্ম্মের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন[২]। কেদার হিমালয়-পর্ব্বতমালার পশ্চিম ভাগে অবস্থিত এবং গোকর্ণ বোম্বাই প্রদেশে অবস্থিত[৩]; সুতরাং এতদ্দ্বারা ধর্ম্মপালদেবের দিগ্বিজয়ের উত্তর ও দক্ষিণ সীমা নির্দ্দিষ্ট হইতে পারে। ধর্ম্মপালের কনিষ্ঠ ভ্রাতা বাক্‌পাল “জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার শাসনে অবস্থিত থাকিয়া, একচ্ছত্র

  1. “গৌড়েন্দ্র-বঙ্গপতি-নির্জ্জয়-দুর্বিদগ্ধ-সদ্‌গুর্জ্জরেশ্বরদিগর্গলতাং চ যস্য।
    নীত্বা ভুজং বিহতমালবরক্ষণার্থং স্বামী তথান্যমপি রাজ্যফলানি ভুঙ্ক্তে॥”
    —Indian Antiquary, Vol. XII, p. 160, ll. 39-40.

  2. কেদারে বিধিনোপযুক্তপয়সাং গঙ্গাসমেতাম্বুধৌ
    গোকর্ণাদিষু চাপ্যনুষ্ঠিতবতাং তীর্থেষু ধর্ম্ম্যাঃ ক্রিয়াঃ।
    ভৃত্যানাং সুখমেব যস্য সকলানুদ্ধৃত্য দুষ্টানিমান্
    লোকান্ সাধয়তোনুষঙ্গজনিতা সিদ্ধিঃ পরত্রাপ্যভূৎ॥৭॥
    —গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৩৬।

  3. Indian Antiquary, Vol. XXI, p. 25.