পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অষ্টম পরিচ্ছেদ।
২১৭

প্রথম বিগ্রহপালকে অভিন্ন ব্যক্তি বলিয়াই গ্রহণ করিতে ইচ্ছা হয়। এই সিদ্ধান্ত সমীচীন বলিয়া গৃহীত হইলে, পালবংশীয় নরপালগণের প্রচলিত বংশাবলীর ভ্রম সংশোধন করিতে হইবে[১]।” মৈত্রেয় মহাশয়ের যুক্তি সমীচীন বলিয়া বোধ হয় না; কারণ, খালিমপুরে আবিষ্কৃত ধর্ম্মপালের তাম্রশাসনে যুবরাজ ত্রিভুবনপালের নাম দেখিতে পাওয়া যায়[২]। কিন্তু প্রশস্তিমধ্যে অথবা অপর কোনও খোদিতলিপিতে ধর্ম্মপালের জীবিতকালে ত্রিভুবনপালের মৃত্যুর কথা উল্লিখিত নাই। ইহা হইতে কি প্রমাণ হইবে যে, ত্রিভুবনপাল ও দেবপাল অভিন্ন ব্যক্তি? রামপালচরিতে প্রথম পরিচ্ছেদে ২৩শ শ্লোকের টীকায় রামপালের পুত্র রাজ্যপালের উল্লেখ আছে[৩]; কিন্তু মনহলিতে আবিষ্কৃত মদনপালদেবের তাম্রশাসনে রাজ্যপালের নাম নাই[৪]। ইহা হইতে কি প্রমাণ হইবে যে, রাজ্যপাল, কুমারপাল বা মদনপালের নামান্তর? প্রথম বিগ্রহপাল এবং প্রথম শূরপালের একত্বের প্রমাণ অন্যবিধ। নারায়ণপাল, প্রথম মহীপাল, তৃতীয় বিগ্রহপাল ও মদনপালের তাম্রশাসনে নারায়ণপালের পিতার নাম বিগ্রহপাল[৫], কিন্তু ভট্টগুরুবমিশ্রের গরুড়-স্তম্ভলিপিতে দেরপালদেবের পরে ও নারায়ণপালদেবের পূর্ব্বে শূরপালের নাম উল্লিখিত আছে[৬]। ইহা হইতে প্রমাণ হইতেছে যে, শূরপাল প্রথম বিগ্রহপালের নামান্তর। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু প্রথম বিগ্রহপালকে ডাঃ

  1. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৩৭, পাদটীকা।
  2. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১৬।
  3. Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol. III, p. 26.
  4. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১৫২।
  5. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৫৮, ৯৩-৯৪, ১২৪, ১৪৯।
  6. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৭৪-৭৫।