কীল্হর্ণের মতানুসারে বাক্পালের পৌত্র ও জয়পালের পুত্ররূপে গ্রহণ করিয়া, শূরপালকে দেবপালের দ্বিতীয় পুত্র ঠিক করিয়াছেন[১]। ইহা কখনই সম্ভব নহে। কারণ, গুরুবমিশ্র নারায়ণপালের প্রধান অমাত্য, তিনি যে নারায়ণপালের পিতার নাম উল্লেখ না করিয়া, নারায়ণপালের পূর্ব্বে দেবপালের পুত্রের নামোল্লেখ করিবেন, ইহা কখনই সম্ভবপর বলিয়া বোধ হয় না। শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের মতানুসারে জয়পাল ধর্ম্মপালের পুত্র[২]; কারণ, নারায়ণপালের তাম্রশাসনে দেবপালকে জয়পালের ‘পূর্ব্বজ’ বলা হইয়াছে। নারায়ণপালের তাম্রশাসনের “রচনারীতি” লক্ষ্য করিলে জয়পালকে বাক্পালের পুত্র বলিয়াই বোধ হয়। কারণ, উক্ত তাম্রশাসনের চতুর্থ শ্লোকে ধর্ম্মপালের কনিষ্ঠ ভ্রাতা বাক্পালের গুণকীর্ত্তন করা হইয়াছে এবং তাহার পরের শ্লোকেই জয়পালের গুণকীর্ত্তন আছে। এই স্থানে কেবল ‘পূর্ব্বজ’ শব্দের উপরে নির্ভর করিয়া জয়পালকে ধর্ম্মপালের পুত্র বলা বিজ্ঞানসম্মত প্রণালী-অনুমোদিত নহে। ধর্ম্মপালের অথবা দেবপালের তাম্রশাসনে বাক্পাল বা জয়পালের নাম নাই। প্রথম বিগ্রহপাল এবং তদ্বংশীয় নরপতিগণের তাম্রশাসনসমূহে বাক্পাল ও জয়পালের উল্লেখ দেখিয়া স্পষ্ট বুঝা যায় যে, প্রশস্তিকারগণ নারায়ণপাল, দেবপালের বংশসম্ভূত নহেন বলিয়াই, নারায়ণপালের পিতা প্রথম বিগ্রহপালের পিতৃপিতামহের নামোল্লেখ করিয়াছেন। এই মত সমীচীন বলিয়া স্বীকার না করিলে নারায়ণপাল এবং তদ্বংশজাত নরপতিগণের তাম্রশাসনসমূহে বাক্পাল ও জয়পালের উল্লেখ অপ্রাসঙ্গিক বলিয়া স্বীকার করিতে হয়। প্রথম বিগ্রহ-
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।