পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ।
২৩৯

উল্লেখ নাই! তাঁহার সূর্য্য হইতে ‘চন্দ্র’রূপে উদ্ভূত বলিয়া এবং তজ্জন্য তাঁহাতে ‘কলাময়ত্বের’ আরোপ করিবার সুযোগ পাইয়া কবি ইঙ্গিতে তাঁহার ভাগ্যবিপর্য্যয়ের আভাস প্রদান করিয়া থাকিবেন। তাঁহার সেনা-গজেন্দ্রগণের (আশ্রয়স্থানাভাবে) নানা স্থানে পরিভ্রমণ করিয়া, শিশির সংক্ষুদ্ধ হিমাচলের অধিত্যকায় আশ্রয় লাভের কথায় এবং মহীপালদেবের ‘অনধিকৃত্য-বিলুপ্ত’ পিতৃরাজ্য পুনঃ প্রাপ্তির কথায়, দ্বিতীয় বিগ্রহপালদেবের শাসনসময়েই পালসাম্রাজ্যের প্রথম ভাগ্যবিপর্য্যয়ের পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যাইতে পারে[১]।” মৈত্রেয় মহাশয়ের উক্তি সম্পূর্ণরূপে বিজ্ঞানসম্মত।

 প্রথম মহীপালদেব পাল-রাজবংশের দ্বিতীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। পূর্ব্ব অধ্যায়ে কথিত হইয়াছে যে, মহীপালের পিতা দ্বিতীয় বিগ্রহপালের রাজ্যকালে বরেন্দ্রী বা উত্তর-বঙ্গ কাম্বোজ জাতি কর্ত্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল, এবং সম্ভবতঃ চন্দেল্লবংশীয় যশোবর্ম্মার সাহায্যে গুর্জ্জর-রাজ মহীপাল মগধ পুনরধিকার করিয়াছিলেন। সুতরাং মহীপালদেব, পিতার মৃত্যুর পরে, রাঢ় ও বঙ্গদেশের কিয়দংশের অধিকার মাত্র, উত্তরাধিকার-সূত্রে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। মহীপাল স্বয়ং বরেন্দ্রী, মগধ ও তীরভুক্তি, এমন কি, বারাণসী পর্য্যন্ত অধিকার করিয়াছিলেন। মহীপালদেবের রাজত্বের তৃতীয় বর্ষের পূর্ব্বে বঙ্গ বা সমতট অধিকৃত হইয়াছিল[২]। কেহ কেহ অনুমান করেন যে, গৌড় হইতে তাড়িত হইয়া পালরাজগণ সমতটে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন[৩]। মহীপালদেবের ষষ্ঠ রাজ্যাঙ্কের পূর্ব্বে

  1. গৌড়লেখমালা ১০০, পাদটীকা।
  2. Dacca Review, May, 1914, p. 55.
  3. শ্রীযুক্ত ষ্টেপলটন একটি অপ্রকাশিত প্রবন্ধের প্রুফ আমাকে অনুগ্রহ করিয়া দেখিতে দিয়াছিলেন। তাহা প্রকাশিত হইয়াছে কি না জানিতে পারি নাই।