পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৭৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

 সুতরাং নয়পালের রাজ্যকালে গাঙ্গেয়দেবই যে তীরভুক্তি অধিকার করিয়াছিলেন, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই।

 জয়পালদেব অথবা তৃতীয় বিগ্রহপালের রাজ্যকালে বরেন্দ্রভূমির শীয়ম্বগ্রামে প্রহাস নামে একজন ব্রাহ্মণ দুইটি মন্দির সংস্কার করাইয়াছিলেন, তাঁহার পিতার নামে ত্রিবিক্রম অথবা বিষ্ণুর একটি মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করাইয়াছিলেন এবং একটি দীর্ঘিকা খনন করাইয়াছিলেন। প্রহাস শ্রাবস্তীভুক্তির তর্কারিকা গ্রাম বিনির্গত ব্রাহ্মণ-বংশজাত এবং আঙ্গীরস গোত্রদ্ভব। তিনি যে সমস্ত পুণ্যকার্য্য করিয়াছিলেন তাহার তালিকা বগুড়া জেলার শিলিমপুর গ্রামে আবিষ্কৃত একটি শিলালেখে প্রদত্ত আছে (Epigraphia Indica, Vol. XII, pp. 283-95.) শিলিমপুরে আবিষ্কৃত এই শিলালেখ এখন রাজসাহীতে বরেন্দ্র-অনুসন্ধান-সমিতির চিত্রশালায় রক্ষিত আছে। এই শিলালেখে কোন রাজার নাম বা তারিখ নাই। এ শিলালেখের দ্বাবিংশতিতম শ্লোক হইতে জানিতে পারা যায় যে, প্রহাস কামরূপ-রাজ জয়পালদেবের নিকট হইতে নয়শত সুবর্ণমুদ্রা এবং কিঞ্চিৎ ভূমি দানস্বরূপ গ্রহণ করেন নাই (Epigraphia Indica, Vol. XII, p. 292)। কামরূপ-রাজ জয়পালদেবের সময়নির্দ্দেশ করিবার কোন উপায় এখনও পর্য্যন্ত আবিষ্কার হয় নাই (এই জয়পাল এবং কামরূপ-রাজ হর্জ্জর বর্ম্মার পৌত্ত্র জয়পাল এক ব্যক্তি নহেন। Journal of the Asiatic Society of Bengal, Vol. LXVI, p. 289 ff; Epigraphia Indica, Vol. V, App. no. 714, p. 96.)

 শিলিমপুরের শিলালেখের অক্ষর নয়পালদেবের পঞ্চদশ রাজ্যাঙ্কে উৎকীর্ণ গয়ানগরের কৃষ্ণদ্বারিকা মন্দিরের (গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১১১-১৫) এবং নরসিংহ মন্দিরের (Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol. V, p. 78.) শিলালেখ দ্বয়ের অনুরূপ; অতএব প্রহাসকে খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধের লোক বলা যাইতে পারে। শিলালেখে পালরাজগণের নামের উল্লেখ না থাকিবার কারণ বুরিতে পারা যায় না।