পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

বৃহৎ কুঠার বা পরশুফলক এবং একখানি কঙ্কণ মাদ্রাজের চিত্রশালায় আছে।

 ধাতু আবিষ্কার করিয়া আদিম মানবগণ ক্রমশঃ অনাবশ্যক আড়ম্বরের বশবর্ত্তী হইয়াছিলেন। এই সময় হইতে মানবসমাজে জীবনযাত্রা-নির্ব্বাহে অনাবশ্যক অলঙ্কার ও আভরণের ব্যবহার আরব্ধ হয়। তাম্রনির্ম্মিত কঙ্কণবলয়ই মানবজাতির শৈশবে ললনাগণের সর্ব্বাপেক্ষা বহুমূল্য আভরণ ছিল। ভারতে বহুবিধ তাম্রনির্ম্মিত অস্ত্র ও আভরণ আবিষ্কৃত হইয়াছে; ইহা হইতে পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে, এতদ্দেশে বহুকাল যাবৎ তাম্রের ব্যবহার ছিল। ভারতে কোন্ সময়ে তাম্রের যুগ আরম্ভ হইয়াছিল, তাহা বলিতে পারা যায় না; তবে অনুমান হয় যে, আর্য্যবিজয়ের সময়ে অথবা তাহার অব্যবহিত পরে লৌহের ব্যবহার আরম্ভ হয় এবং ক্রমশঃ তাম্রের ব্যবহার উঠিয়া যায়[১]

  1. কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সহকারী অধ্যাপক শ্রীযুক্ত পঞ্চানন মিত্র কলিকাতা চিত্রশালায় যে সমস্ত নব্য-প্রস্তরযুগের আমূধ রক্ষিত আছে তাহা পরীক্ষা করিয়া দুই তিনটি লিপিযুক্ত কুঠারফলক আবিষ্কার করিয়াছেন (Indian Antiquary Vol. XLVII, 1919, pp. 57-64) এই সমস্ত নব্য-প্রস্তরযুগের আয়ুধ খননে আবিষ্কৃত হয় নাই। সেইজন্য প্রেসিডেন্সি কলেজের ভূতত্ত্ব-অধ্যাপক শ্রীযুক্ত হেমচন্দ্র দাশগুপ্ত এই কুঠারফলকগুলির লিপি কুঠারফলকের সমসাময়িক কি না অর্থাৎ এই লিপিগুলি নব্য-প্রস্তরযুগের লিপি কি না সে বিষয়ে সন্দেহ করেন। এই সমস্ত কুঠারফলক হয়ত নব্য-প্রস্তরযুগের সহস্ৰ সহস্র বৎসর পরে মানবকর্ত্তৃক ব্যবহৃত হইয়াছিল এবং তৎকালে কেহ উহার উপরে কিছু লিথিয়া রাখিয়া থাকিবে।