পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৩২৯

হইতে গণিত হইয়াছে এবং দ্বিতীয়টি মুসলমান-বিজয়কাল হইতে, অর্থাৎ—১২০০ খৃষ্টাব্দ হইতে গণিত হইয়াছে। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ[১], শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু[২] ও শ্রীযুক্ত নলিনীকান্ত ভট্টশালী[৩] এই মতের প্রবর্ত্তক। ভট্টশালী মহাশয় বলেন যে, দ্বিতীয় লক্ষ্মণাব্দ বর্ত্তমান সময়ে পরগণাতিসন নামে পূর্ব্ববঙ্গে প্রচলিত আছে[৪]। এই সকল ভিন্ন ভিন্ন মতের নিরসন অতি সহজ। যে অব্দের নাম লক্ষ্মণাব্দ, তাহা লক্ষ্মণসেনের কোন পূর্ব্ব পুরুষ কর্ত্তৃক প্রচলিত হইতে পারে না। ভারতবর্ষের ইতিহাসে কোন রাজবংশের কোন উত্তরপুরুষ, পূর্ব্বপুরুষ প্রচলিত অব্দ স্বনামে পুনঃ প্রচলিত করেন নাই। সুতরাং প্রমাণাভাবে লক্ষ্মণাব্দকে সামন্তসেন, হেমন্তসেন, বিজয়সেন অথবা বল্লালসেন কর্ত্তৃক প্রবর্ত্তিত অব্দ বলা যাইতে পারে না। যাঁহারা ঐতিহাসিক তথ্যের অনুসন্ধান করিতে যাইয়া পূর্ব্ব সংস্কার পরিত্যাগ করিতে ক্লেশানুভব করিয়াছিলেন, তাঁহাদিগের প্রবর্ত্তিত একাধিক লক্ষ্মণাব্দের অস্তিত্ব সম্বন্ধে অধিক কথা বলা উচিত নহে। আর্য্যাবর্ত্ত বা দাক্ষিণাত্যের ইতিহাসে এক রাজা কর্ত্তৃক একাধিক অব্দ প্রচলনের একটিও দৃষ্টান্ত অন্বেষণ করিয়া পাওয়া যায় না। কোন রাজ্য ধ্বংসের কাল হইতে একটি অব্দ গণিত হইবার দৃষ্টান্তও ভারতের ইতিহাসে নাই এবং ইহা সম্ভবপর বলিয়া বিদ্বজ্জনমণ্ডলীর বিশ্বাস আছে—বর্ত্তমান সময়ে ইহা দেখিলেও দুঃখিত হইতে হয়। গৌপ্তাব্দের প্রকৃত কাল নির্দ্ধারিত হইবার পূর্ব্বে যাঁহারা মনে করিতেন যে, গুপ্তবংশ ধবংসের কাল হইতে গৌপ্তাব্দ গণিত হইতেছে, তাঁহারা

  1. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৬৪।
  2. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, (রাজন্য কাণ্ড), পৃঃ ৩৫১-৫২।
  3. Dacca Review, 1912, pp. 88-93.
  4. Ibid, p. 90; Indian Antiquary Vol. XLI, 1912, pp. 167-69.