পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।

লক্ষ-রাজ অশোকচল্লের কনিষ্ঠ ভ্রাতা দশরথের শিলালিপিতে পুনরায় লক্ষ্মণাব্দের ব্যবহার দেখিতে পাওয়া যায়[১]। ইহার পরে মগধদেশ মুসলমান-নায়ক মহম্মদ্-ই-বখ্‌তিয়ার খিল্‌জির আক্রমণে জর্জ্জরিত হইয়া উঠিয়াছিল এবং দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ বৎসরদ্বয়ে মগধ ও গৌড় মুসলমানগণ কর্ত্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল।

 খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর মগধাধিপ গোবিন্দপাল কে? এবং পাল-রাজবংশের সহিত তাঁহার কোন সম্বন্ধ ছিল কি না, তাহ নির্ণয় করিবার কোন উপায়ই অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। তাঁহার পাল উপাধি, “পরমেশ্বরপরমভট্টারক, মহারাজাধিরাজ” ইত্যাদি সম্রাটপদবী এবং বৌদ্ধধর্ম্মে প্রগাঢ় অনুরাগসূচক “পরমসৌগত” বিশেষণ দেখিয়া অনুমান হয় যে, তিনি পাল-রাজবংশসম্ভূত ছিলেন। নালন্দায় লিখিত ‘অষ্টসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা’ পুথি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, তাঁহার চতুর্থ রাজ্যাঙ্কে নালন্দা নগর তাঁহার অধিকারভুক্ত ছিল[২]। ১১৭৫ খৃষ্টাব্দেও তিনি জীবিত ছিলেন; কারণ উক্ত বর্ষে উৎকীর্ণ গদাধর-মন্দিবের শিলালিপিতে তাঁহার রাজ্যাঙ্ক উল্লিখিত হইয়াছে। এই শিলালিপিতে বিক্রমাব্দের ব্যবহার আছে, তাহা সত্ত্বেও গোবিন্দপালের চতুর্দ্দশ রাজ্যঙ্কের উল্লেখ[৩] দেখিয়া বুঝিতে পারা যায় যে, গোবিন্দপাল তখন জীবিত ছিলেন; কিন্তু গয়া নগরী তখন তাঁহার হস্তচ্যুত হইয়াছিল। গয়া বোধ হয় ১১৭৫ খৃষ্টাব্দের অব্যবহিত পূর্ব্বে গোবিন্দপালের অধিকারভুক্ত ছিল, তাহা না হইলে বিক্রমাব্দের ব্যবহার সত্ত্বেও গদাধর-মন্দিরের শিলা-

  1. বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা, ১৭শ ভাগ, পৃঃ ২১৬।
  2. Journal of the Royal Asiatic Society, New Series, Vol. VIII, p. 3.
  3. Cunningham’s Archaeological Survey Reports, Vol. III,