পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।

যায়। অন্ধ্ররাজবংশের পরে আভীর, গর্দভিল্ল, শক, যবন, তুষার, মুরুণ্ড ও হূণবংশীয় রাজগণেরও উল্লেখ আছে—Dynasties of the Kali Age, pp. 45-47.।

 বাঙ্গালা ১৩১৪ সালে প্রকাশিত “বাঙ্গালার পুরাবৃত্ত” নামক গ্রন্থে গ্রন্থকার শ্রীযুক্ত পরেশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলিয়াছেন,—“অনুমান ৬০০ খৃষ্টপূর্ব্বাব্দের নিকটবর্ত্তী কোন সময়ে যৌধেয় জাতি ভারতবর্ষের পূর্ব্বাংশ অধিকার করে (পৃঃ ১২৫); কিন্তু যৌধেয় জাতি কর্ত্তৃক আর্য্যাবর্ত্তের পূর্ব্বাংশ বিজয়ের কোন বিজ্ঞান সম্মত প্রমাণ আবিষ্কৃত হইয়াছে বলিয়া বোধ হয় না। সম্প্রতি শ্রীযুক্ত সতীশচন্দ্র মিত্র প্রণীত যশোহর খুলনার ইতিহাসে যৌধেয়গণ কর্ত্তৃক উত্তরাপথের পূর্ব্বাঞ্চল বিজয়ের কথা উল্লিখিত হইয়াছে (পৃঃ ১৬৯)।

 ১৯১৩ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী মাসে বোম্বাইয়ের পারসীজাতীয় বণিক্‌ স্যর রতন তাতার ব্যয়ে প্রত্নতত্ত্ববিভাগের পূর্ব্বচক্রের অধ্যক্ষ ডাক্তার স্পুনার (Dr. D. B. Spooner) পাটলিপুত্র খনন আরম্ভ করেন। পাটনা ও বাঁকিপুরের মধ্যস্থিত কুমারাহার গ্রামে তিনি একটি স্তম্ভ ও বহু স্তম্ভের খণ্ড আবিষ্কার করিয়া স্থির করিয়াছেন যে, এই স্থানে চন্দ্রগুপ্ত বা অপর কোন মৌর্য্যরাজা শতস্তম্ভবিশিষ্ট একটি সভাগৃহ নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন এবং এই গৃহ পারস্যদেশের পার্সিপোলিস্ নগরের হখামানীষীয় রাজগণ কর্ত্তৃক নির্ম্মিত সভাগৃহের অনুকরণে নির্ম্মিত হইয়াছিল (Annual Report of the Archaeological Survey of India, Eastern Circle, for 1912-13. pp. 59-61.)। পাটলিপুত্রের খননে কোনও উল্লেখযোগ্য শিলালিপি আবিষ্কৃত হয় নাই। পরবৎসর কুষাণবংশীয় রাজগণের ৫২টি তাম্রমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছিল (Ibid-1913-14, p. 71.)। প্রথম বৎসরের খননে নিম্নলিখিত প্রাচীন মুদ্রাগুলি আবিষ্কৃত হইয়াছিল:–

 ১। কৌশাম্বী নগরীর প্রাচীন মুদ্রা।
 ২। মিত্রবংশের (শুঙ্গবংশ) মুদ্রা, ইহার মধ্যে ইন্দ্রমিত্রের দুইটি মুদ্রা আছে।
 ৩। কাণিষ্কের দুইটি তাম্রমুদ্রা, ইহার একদিকে রাজার মূর্ত্তি ও অপরদিকে পবনদেবতার মূর্ত্তি আছে।

 পাটলিপুত্রে আবিষ্কৃত গুপ্তবংশজ রাজাগণের মুদ্রা যথাস্থানে উল্লিখিত হইবে[১]

  1. Annual Report of the Archaeological Survey of India, Eastern circle, 1912-13, p. 61.