পথ বিজিত হইলে সমুদ্রগুপ্ত দক্ষিণাপথ জয় করিবার উদ্যোগ করিয়াছিলেন। তিনি তাঁহার রাজধানী পাটলিপুত্র হইতে যাত্রা করিয়া মগধ ও উড়িষ্যার মধ্যবর্ত্তী বনময় প্রদেশের দুইজন রাজাকে পরাজিত করিয়াছিলেন। এই দুইজনের মধ্যে প্রথম, দক্ষিণ কোশলরাজ মহেন্দ্র ও দ্বিতীয় মহাকান্তার বা ভীষণ বনের অধিপতি ব্যাঘ্ররাজ। ইহার পরে তিনি কৌরলদেশের অধিপতি মণ্টরাজকে পরাজিত করিয়া কলিঙ্গদেশের পুরাতন রাজধানী পিষ্টপুর (আধুনিক পিট্টপুরম্), মহেন্দ্রগিরি ও কোট্টুর দুর্গ অধিকার করিয়াছিলেন। কোট্টুর ও পিষ্টপুরের অধিপতি স্বামিদত্ত, এরণ্ডপল্লরাজ দমন, কাঞ্চিনগরাধিপতি বিষ্ণুগোপ, অবমুক্তরাজ নীলরাজ, বেঙ্গীনগরাধিপতি হস্তিবর্ম্মা, পলক্করাজ উগ্রসেন, দেবরাষ্ট্রের অধিপতি কুবের এবং কুস্থলপুররাজ ধনঞ্জয় প্রভৃতি দক্ষিণাপথের রাজগণ সমুদ্রগুপ্ত কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়াছিলেন। সমতট (দক্ষিণ অথবা পূর্ব্ববঙ্গ), ডবাক (সম্ভবতঃ ঢাকা), কামরূপ, নেপাল, কর্ত্তৃপুর (বর্ত্তমান কুমায়ুন ও গঢ়োয়াল) প্রভৃতি সীমান্ত রাজ্যের নরপতিগণ, এবং মালব, আর্জ্জুনায়ন, যৌধেয়, মদ্রক, আভীর, প্রার্জ্জুন সনকানীক, কাক, খরপরিক প্রভৃতি জাতিসমূহ তাঁহাকে কর প্রদান করিত[১]। উত্তরাপথ ও দক্ষিণাপথ বিজিত হইলে সমুদ্রগুপ্ত অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। তাঁহার আদেশে নির্ম্মিত যজ্ঞীয় অশ্বের একটি প্রস্তরমূর্ত্তি হিমালয় পর্ব্বতের পাদমূলে বনময় প্রদেশে আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ইহা এক্ষণে লক্ষ্ণৌ চিত্রশালায় রক্ষিত আছে[২]। অশ্বমেধ যজ্ঞের দক্ষিণা প্রদানের জন্য তিনি এক নূতন প্রকারের সুবর্ণমুদ্রা মুদ্রাঙ্কিত করাইয়া-
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৭০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
বাঙ্গালার ইতিহাস।