পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

বিগ্রহিক কুমারামাত্য হরিষেণ কর্ত্তৃক শ্লোক রচনা করাইয়া সম্রাট্ অশোক কর্ত্তৃক প্রতিষ্ঠিত শিলাস্তম্ভগাত্রে উৎকীর্ণ করাইয়াছিলেন। সমুদ্রগুপ্তের পত্নীর নাম দত্তদেবী। তাঁহার দেহাবসান হইলে দত্তদেবীর গর্ভজাত পুত্র চন্দ্রগুপ্ত (দ্বিতীয়) সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন।

 মহারাজাধিরাজ দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত সিংহাসনে আরোহণ করিয়া বিক্রমাদিত্য উপাধি গ্রহণ করিয়াছিলেন। প্রথম চন্দ্রগুপ্ত অথবা সমুদ্রগুপ্ত কোন্ সময়ে সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন, তাহা নির্ণয় করিবার উপায় অদ্যাপি আবিষ্কৃত হয় নাই। গুপ্ত রাজবংশের অধিকার কালে একটি নূতন বর্ষ গণনা আরম্ভ হইয়াছিল, ইহাই খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে গৌপ্তাব্দ নামে পরিচিত হইয়াছিল[১]। পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে, এই বর্ষগণনা প্রথম চন্দ্রগুপ্তের রাজ্যাভিষেক কালে প্রবর্ত্তিত হইয়াছিল। ৩১৯ খৃষ্টাব্দ হইতে গৌপ্তাব্দের গণনা আরব্ধ হইয়াছে সুতরাং ধরিয়া লইতে হইবে যে, ৩১৯ অথবা ৩২০ খৃষ্টাব্দে প্রথম চন্দ্রগুপ্ত সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। প্রথম চন্দ্রগুপ্তের সময়ের কোন খোদিতলিপিই অদ্যাপি আবিষ্কৃত হয় নাই। সমুদ্রগুপ্তের রাজ্যকালের তিনখানি খোদিতলিপি অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হইয়াছে, ইহার মধ্যে দুইখানি শিলালিপি ও তৃতীয় খানি তাম্রশাসন। শিলালিপি দুইখানিতে তারিখ নাই[২], এবং তাম্রশাসনখানি কূটশাসন বলিয়া প্রমাণিত হইয়াছে[৩]। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজ্যকালের খোদিতলিপি সমূহে গৌপ্তাব্দের বর্ষ গণনানুসারে তারিখ প্রদত্ত হইয়াছে। মালবে উদয়গিরি পর্ব্বতের একটি গুহায়

  1. Epigraphia Indica Vol. II. p. 143.
  2. Fleet's Corpus Inscriptionum Indicarum, Vol. III. p. 6; p. 20.
  3. Ibid, p. 256. এই তাম্রশাসনখানি সমুদ্রগুপ্তের নবম রাজ্যাঙ্কে প্রদত্ত হইয়াছিল। ইহা গয়া জেলার কোন স্থানে আবিষ্কৃত হইয়াছিল।