পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ বাঙ্গালার ইতিহাস করেন নাই । তিনি লিখিয়াছেন যে, দ্বিতীয়দিন গণেশের গৃহে প্রবেশকালে শেখ বদরূ-উল-ইসলামৃ মস্তক অবনত করেন নাই বলিয়া গণেশ তাহার প্রাণদণ্ড করিয়াছিলেন ২০ । খৃষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে, প্রাচ্যে বা প্রতীচ্যে, পৃথিবীর যে কোনও দেশে, কোনও রাজ্যে, কোন ধৰ্ম্মযাজক, রাজাকে এইরূপভাবে অবমানিত করিলে তাহাকে প্রাণদণ্ডাপেক্ষা ভীষণতর দণ্ডে দণ্ডিত হইতে হইত। যদি কোন হিন্দু কোনও মুসলমান রাজাকে এইরূপভাবে অবমানিত করিত, তাহ হইলে মুসলমান রাজা কি তাহাকে পুরস্কৃত করিতেন ? গোলাম হোসেন মুসলমান ধৰ্ম্মযাজক ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রতি গণেশের অত্যাচারের যে সমস্ত কথা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, তাহ সত্য হওয়াই সম্ভব, কারণ রিয়াজ-উস্-সালাতন হইতে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, মুসলমান বিজিত ভারতে, বহুকাল পরে, একজন হিন্দুরাজা পরাক্রান্ত হইয়া উঠায়, গৌড়দেশের মুসলমান-সম্প্রদায় অত্যন্ত বিচলিত হইয়া উঠিয়াছিল। গৌড় ও বঙ্গে নিয়শ্রেণীর জনসমাজ মুসলমান পীর ও ফকীরগণের অত্যাচারের ভয়ে, মুসলমান ধৰ্ম্মে হিন্দুধর্মের কঠোরতার অভাব দেখিয়া এবং মুসলমান-শাসিত রাজ্যে উচ্চজাতীয় হিন্দু অপেক্ষ মুসলমান ধৰ্ম্মাবলম্বী ইতরশ্রেণীর ব্যক্তিগণের অধিকতর সমাদর দেখিয়া মুসলমান ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়াছিল। এই সকল নিয়শ্রেণীর মুসলমান সমাজে রাজা অপেক্ষ, পীর, ফকীর, মুরশিদ প্রভৃতি উপাধিধারী ধৰ্ম্মযাজকগণের প্রভাব অত্যন্ত অধিক ছিল। শমস্-উদ্দীন ইলিয়াসূ শাহের বংশধরগণ হীনবল হইয়া পড়িলে এবং বিধৰ্ম্মী হিন্দুরাজ গণেশ পরাক্রান্ত হইয়া উঠিলে, এই সকল ধৰ্ম্মযাজকগণ সম্ভবতঃ তাহাদিগের শিষ্যসেবকগণকে উত্তেজিত করিয়া গণেশের প্রাধান্য স্থাপনে বাধা দিয়াছিলেন, সেইজন্যই গণেশ মুসলমান ধৰ্ম্মযাজকদিগকে হত্যা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। গণেশ কর্তৃক গৌড়ের একজন মুসলমান বাদশাহ হত্যার কথা ঈশান নাগরের অদ্বৈত প্রকাশে দেখিতে পাওয়া যায় ৩* । (২১) রিয়াজ-উস-সালাড়ীন, ইংরাজি অনুবাদ, পৃঃ ১১৩-১৪। (eo) “যেই নরসিংহ নাডিয়াল বলি খ্যাত । সিদ্ধশ্রোত্রিয়াখ্য আরু ওঝার বংশজাত । যেই নরসিংহ যশ ঘোষে ত্ৰিভূবন। সৰ্ব্বশাস্ত্রে সুপণ্ডিত অতি বিচক্ষণ । यहांद्र मढ़नं बटल चैत्रtर्णनं ब्रांछ ! গৌড়িয়া বাদশাৰে মারি’ গৌড়ে হৈল রাজা ।" -১৪৯০ শকে রচিত্ত অদ্বৈত প্রকাশ, অধ্যায় ১, পৃঃ ও ৮