পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8() বাঙ্গালার ইতিহাস পরে (সম্ভবতঃ দিল্লীর সেনা সাহায্যার্থ উপস্থিত হইলে ) যুজ বকৃ উমর্দন (? জাজ নগর ) রাজ্য আক্রমণ করিলেন এবং গোপনে যুদ্ধযাত্রা করিয়া রাজধানীতে উপস্থিত হইলেন । রাজ ( সম্ভবতঃ পরাজিত হইয়া ) রাজধানী পরিত্যাগ করিলেন এবং তাহার পরিবার ও অনুচরবর্গ সমস্ত হস্তী ও ধনরত্ন মুসলমানগণের হস্তগত হইল"ত । * জাজ নগর হইতে ফিরিয়া আসিয়া য়ুজ বক অত্যন্ত গৰ্ব্বিত হইয়া উঠিলেন এবং রক্ত, কৃষ্ণ ও শ্বেত এই তিন বর্ণের চন্দ্ৰাতপ ব্যবহার করিতে আরম্ভ করিলেন। ইহার পরে যুজবেক, লক্ষ্মণাবতী হইতে আউধ আক্রমণ করিয়া উক্ত প্রদেশের রাজধানী অধিকার করিলেন এবং সুলতান মুগাসূ-উদ্দীন উপাধি গ্রহণ করিলেন। আউধে একপক্ষ কাল বাস করিয়া সুলতান মুগীসূ-উদ্দীন সম্রাটের সেনাদলভূক্ত জনৈক তুর্কী আমীরের নিকট শুনিতে পাইলেন যে, সম্রাটের সেনা নিকটবর্তী হইয়াছে। মুগাসূ-উদ্দীন ভীত হইয়া নৌকারোহণে লক্ষ্মণাবতীতে পলায়ন করিলেন । যুজ বক্‌ স্বাধীনতা অবলম্বন করায় ভারতবাসী হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ই র্তাহাকে অত্যন্ত নিন্দ করিতে আরম্ভ করিয়াছিল। লক্ষ্মণাবতীতে প্রত্যাবত্তন করিয়া যুজ বক্ কামরূপ আক্রমণ করিতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন এবং সসৈন্যে বেগমতী বা করতোয় নদী পার হইলেন। তদানীন্তন কামরূপ-রাজের তেমন সেনাবল ছিল না, তিনি মুসলমান সেনার গতিরোধ করিতে পারিবেন না, ইহা বুঝিতে পারিয়া পশ্চাৎপদ হইয়াছিলেন। যুঁজ-বক্ কামরূপ বিজয় করিয়া বহু ধনরত্বের অধিকারী হইয়াছিলেন। কামরূপ নগর অধিকৃত হইলে কামরূপরাজ দূতমুখে সন্ধির প্রস্তাব প্রেরণ করিয়াছিলেন । তিনি রাজ্য পুনঃপ্রাপ্তির মূল্যস্বরূপ প্রতি বৎসর সুবর্ণ ও হস্তী প্রদান করিতে, যুজ বকের নামে খোংবা পাঠ করাইতে এবং মুদ্রা মুদ্রাঙ্কন করাইতে প্রস্তুত হইয়াছিলেন । যুজ বকু কামরূপরাজের প্রস্তাব গ্রহণ করেন নাই । ইহার পরে কামরূপরাজের আদেশে তদেশীয়গণ কামরূপ রাজ্যের সমস্ত খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করিয়া লইল । কামরূপ প্রচুর শস্যশালী দেখিয়া যুজ বক্‌ র্তাহার সেনার জন্য খাদ্যদ্রব্য সঞ্চয় করেন নাই। দেশের সমস্ত খাদ্যদ্রব্য ক্রীত ফুলে, কামরূপরাজের আদেশে তাহার প্রজাবৰ্গ পয়ঃপ্রণালীসমূহের মুখ ধুলিয়া দিয়া মুসলমানগণ কর্তৃক অধিকৃত ভূমি জলমগ্ন করিয়া দিয়াছিল। মুসলমান (৬৩) তবকাৎ-ই-নাসিরী, ইংরাজি জম্বুবাদ, পূঃ ৭৬৩।