পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) দ্বিতীয় খন্ড.djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ ԵՏ এসিয়াটিক সোসাইটির কর্তৃপক্ষগণ র্তাহার নিকট হইতে এই শিলালিপির প্রতিলিপি চাহিয়া পঠাইয়াছিলেন । সম্ভবতঃ প্রতিলিপি প্রেরিত হয় নাই বলিয়া প্রবন্ধটি এসিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায় মুদ্রিত হয় নাই । ব্লখ-ম্যান ( Biochmann ) অনুমান করেন যে, একডালার বাঙ্গালা নাম একদলং। মুসলমান ঐতিহাসিকগণ “একডালা" লিখিয়া থাকেন। সম্ভবত একডালা বা একদল নামে একাধিক দুর্গ ছিল; কিন্তু ফিরোজ শাহের আক্রমণের ভয়ে শমস্-উদ্দীন ইলিয়াস শাহ যে একডাল দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাত পুৰ্ব্ববঙ্গে অবস্থিত হইতে পারে না, কারণ প্রথমতঃ সমসাময়িক মুসলমান ঐতিহাসিক জিয়া-উদ্দীন বাণী লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন যে, এই একডাল পাণ্ডুয়ার নিকটে অবস্থিত একটি গ্রাম এবং ইহার একদিকে জঙ্গল ও অপরদিকে নদী আছে । দ্বিতীয়তঃ পূৰ্ব্ববঙ্গ তখনও শমস্-উদ্দীন ইলিয়াস শাহ কর্তৃক অধিকৃত হয় নাই, কারণ ফখরত-উদ্দীন মবারক শাহ তখনও জীবিত ছিলেন। গণহারা বলেন যে, একডালা পূৰ্ব্ববঙ্গে অবস্থিত, তাহারা সম্ভবতঃ অন্যতম সমসাময়িক মুসলমান ঐতিহাসিক শমস্-ইসিরাজ আফিফের উক্তিতে অধিকতর আস্থা স্থাপন করেন। আর্কিফের তারিখত-ই-ফিরোজ শাহীতে একডালার দ্বীপ বা দ্বীপমালা ( জজাঈর ) বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে পূৰ্ব্ববঙ্গের নদীবেষ্টিত ভূখণ্ডকে যদি দ্বীপমালা বলা যাইতে পারে, তাহা হইলে গঙ্গা-মহানন্দা-কালিন্দী-বেষ্টিত গৌড়নগরের উপকণ্ঠকে যে, কেন দ্বীপমালা বলা যাইতে পারিবে না তাহা বুঝিতে পারা যায় না। রাভেনশ ( Raveneshaw ) প্রদত্ত মানচিত্রে গৌড়ের পূৰ্ব্বে বহু জলাভূমি ও হ্রদ দৃষ্ট হয়ং, বর্ষাকালে এই সমস্ত হ্রদ ও জলাভূমি কালিন্দী, গঙ্গা ও মহানন্দার সহিত মিলিত হইয়া সমুদ্রবং বিস্তৃত জলাশয়ে পরিণত হয় তখন উচ্চ-ভূখণ্ডগুলি পশ্চিমাঞ্চলবাসী ব্যক্তিগণের নিকট দ্বীপের ন্যায় প্রতীয়মান হয় । সম্ভবতঃ এইরূপ দৃশ্বাই আফিফের গ্রন্থে একডালা-দুর্গকে দ্বীপরূপে বর্ণনার কারণ। (*«) Ibid, Vol. XLII, 1873, pt. I, p. 212, note (৩) জিয়া-উদ্দীন বাণী রচিত তারিখ-ই-ফিরোজ, শাহী, পারস্য মূল, পৃঃ ৫৮৮ (48) Elliot's History of India, Vol. III, p. 294. (**) Ravenshaw's Gaur—its ruins and Inscriptions, Map.