পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রথম খন্ড.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

参臀 বাঙ্গালার ইতিহাস । পারে। ইউয়ান-চেয়াং বারানসী হইতে মহাসারনগর (বর্তমান আরার নিকটস্থিত মালার গ্রামে ) এবং মহাসার হইতে বৈশালী নগরে গমন করিয়াছিলেন । বর্তমান মজঃফরপুর জেলার দশক্রোশ দূরবর্তী বসাঢ় গ্রামে প্রাচীন বৈশালী নগরের ধ্বংসীবশেষ দেখিতে পাওয়া ষায় উয়ান-চেয়াং যে সময়ে বৈশালী দর্শন করিয়াছিলেন, সে সময়ে নগরধ্বংসোন্মুখ। বৈশালীনগরে যে হ্রদের তীরে একটি বানর বুদ্ধদেবকে একপাত্ৰ মধু অৰ্পন করিয়াছিল, সেই হ্রদের তীরে, চৈনিক শ্রমণ সম্রাট অশোক কৰ্ত্তক প্রতিষ্ঠিত একটি বৃহৎ শিলাস্তম্ভ দর্শন করিয়াছিলেন। সে সময়ে বৈশালী নগরে ব্রাহ্মণ, জৈন ও বৌদ্ধ তিন সম্প্রদায়েরই মন্দির ও মঠ ছিল ; কিন্তু দিগম্বর জৈন সম্প্রদায়ের প্রভাব সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক ছিল। ইউয়ানচোয়াং লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন, বৈশালী হইতে দুই ক্রোশ দূরে একটি কূপ আছে, এই স্থানে সপ্তশত অৰ্হৎ বিনয় ও অভিধর্মপিটক সংগ্ৰহ করিয়াছেন। পরিব্রাজক, বৈশালী হইতে বজিদেশ ও নেপাল ভ্রমণ করিয়া মগধে প্রত্যাবর্তন করিয়াছিলেন। তখন মগধদেশের অবস্থা অতি শোচনীয় ; নগর সমূহ জনশূন্ত এবং রাজধানী পাটলিপুত্রনগরী শ্বাপদসঙ্কুল অরণ্য, তখন মগধে বৌদ্ধধর্মের অপ্রতিহত প্রভাব ; ব্রাহ্মণ্যধর্মের একশত দেবমন্দিরও ছিল না, পাটলিপুত্র নগর গঙ্গাতীরে অবস্থিত ছিল এবং ইহার ধ্বংসাবশেষের পরিধি সপ্তক্রোশের অধিক । পাটলিপুত্রের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে চীনদেশীয় শ্রমন মৌর্য্যসম্রাটগণের পুরাতন প্রাসাদ, অশোক নিৰ্ম্মিত দুই তিনটি শিলাস্তম্ভ এবং বহু মন্দির, বিহার, সজারামাদির ধ্বংসাবশেষ দর্শন করিয়াছিলেন । এই স্থানে তখন একটি খোদিতলিপিযুক্ত শিলাস্তম্ভ ও পাষাণখণ্ডে অঙ্কিত গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্ন দেখিতে পাওয়া যাইত এবং এই স্থানে ইউয়ান-চেয়াং কুক্কুটারাম বা কুঙ্কটপাদবিহারের ধ্বংসাবশেষ দর্শন করিয়াছিলেন । ইউয়ান-চোয়াং পাটলিপুত্র হইতে গয়া এবং গয়া হইতে বুদ্ধগয়ায় গমন করিয়াছিলেন, গয়া নগর তখনও ব্রাহ্মণ প্রধান ছিল। তখন বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি বিহারের বহির্দেশে সিংহলের জনৈক ভূতপূৰ্ব্ব অধিপতি নিৰ্ম্মিত একটি বৃহৎ সঙ্গারাম ছিল ; ইহাতে সহস্ৰাধিক মহাযান মতাবলম্বী ভিক্ষু বাস করিতেন। তখন প্রতি বৎসর বর্ষাকালের শেষে চতুর্দিকের ‘ভিক্ষু ও শ্রমনগণ এইস্থানে আসিয়া সপ্তাহকাল উৎসবে নিমগ্ন থাকিতেন। মহাবোধি (**) Annual Report of A. S. of I. 1903-4; p. 81.