পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস (রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রথম খন্ড.djvu/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ তত্ৰাদিশুর পূর্বংশসিংহে বিজিত্য বৌদ্ধং নৃপপালবংশং। শশাস গোঁড়” ইত্যাদি । গৌড়ে ব্রাহ্মণবৃত এই শোষোক্ত বচন আবার ত্রযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বস্থ কর্তৃক “ৰারেন্দ্র কুলপঞ্জিকা ধৃত “শাকেবেদকলম্বষীকবিনিতে রাজাদিশুর স চ ( বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস প্রথম ভাগ, ৮৩ পৃ: ) এই বচনের অর্থাৎ—আদিশূর ৬৫৪ শকাৰে বৰ্ত্তমান ছিলেন, এই মতের বিরোধী । যে যে কুলজ্ঞগণের সহিত আলাপ করিয়াছি, তাহার এ সকল বচনের কোনটির বিষয়েই অবগত নহেন। সুতরাং এই সকল বচন প্রবল জনশ্রুতিমূলক বলিয়া স্বীকার করা যায় না...'লঘু ভারতকারও আদিশূর কর্তৃক গৌড়ের পাল-বংশ উচ্ছেদের উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন (গৌড়ে ব্রাহ্মণ ৩২ পৃ: ৪নং টীকা ) ।”—গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৫৭-৫৮ । শ্ৰীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ সংগৃহীত আদিশূর সম্বন্ধীয় কুলশাস্ত্রের প্রমাণ পৰ্য্যালোচনা করিলে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে ১৩১৯ বঙ্গান্ধের পূৰ্ব্বে আবিষ্কৃত কুলশাস্ত্রসমূহে আদিশূরের আবির্ভাবকাল সম্বন্ধে দুইটি ভিন্ন মত ছিল । প্রথম মতানুসারে আদিশূর পাল-রাজবংশের পূর্ববর্তী, তিনি ৬৫৪ শকে আবির্ভূত হইয়াছিলেন এবং আদিশূর প্রথম গোপালদেবের সমসাময়িক ব্যক্তি। দ্বিতীয় মতানুসারে আদিশূর পাল-রাজগণকে পরাজিত করিয়া গৌড়ের অধিকার লাভ করিয়াছিলেন ; “ভাদুড়ীকুলের বংশাবলীতে ও লঘুভারতে এই মত দেখিতে পাওয়া যায়। জয়ন্ত ও আদিশূরের একত্ব সম্বন্ধে যে সমস্ত প্রমাণ আবিষ্কৃত হইয়াছে, তৎসমুদয় পূবে ( ১১৪-১১৮ পৃ: ) আলোচিত হইয়াছে। ১৩৩১ বঙ্গাদে প্রকাশিত ‘বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস’ রাজন,কাণ্ডে শ্ৰীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বস্থ কতকগুলি নূতন মত প্রকাশ করিয়াছেন – (১) রাষ্ট্ৰীয় কুলমঞ্জরীতে বর্ণিত হইয়াছে, ৬৫৪ শকে, অর্থাৎ ৭৩২ খৃষ্টাব্দে আদিশূর রাজা হন এবং ৬৬৮ শকে বা ৭৪৬ খৃষ্টাব্দে সায়িক বিপ্রগণ গৌড়ে আগমন করেন ।”—পৃ: ১২ ৷ (২) “স্বপ্রসিদ্ধ রাঢ়ীয় কুলাচাৰ্য্য বাচপতিমিশ্রের মতে ৬৫৪ শকেই ( ৭৩২ খৃষ্টাব্দে ) বিপ্রগণ গৌড়ে সমাগত হন ।” (৩) “বারেন্দ্র কুলপঞ্জীর মতে••••••৬৫৪ শকে--- কান্যকুজোস্তব সমুজ্জলকাস্তিবিশিষ্ট পঞ্চগোত্রের পঞ্চজন বেদবিদ ব্রাহ্মণকে আনিবার জন্য যত্নবান, হইয়াছিলেন।” পৃ: ১৩ । (৪) আমার নানা গ্রন্থ আলোচনা করিয়া বুঝিয়াছে যে, “আদিশূর, ব্যাক্তিবিশেষের নাম নহে। মুসলমান আগমনের পূৰ্ব্বে বিভিন্ন সময়ে যে যে হিঙ্গু নৃপতি হিন্দুসমাজ সংস্কারে মনোযোগী হইয়াছেন, কুল-গ্রন্থকারগণ সেই সেই নৃপতিকেই ‘জাপূিৰ্ব’ নাম দিয়া গৌরবান্বিত করিয়াছেন। তন্মধ্যে রাষ্ট্ৰীয় ও বাক্সে ব্রাহ্মণগণের বীজপুরুষ ক্ষিতিশ, তিথিমেধ, বীতরাগ, স্বধানিধি ও সোঁভৰি ।