পাতা:বাঙ্গালা ভাষার অভিধান (প্রথম সংস্করণ).djvu/৪১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কান বেলা, কানে কানে কথা কওয়া— পরম্পর কানের অতি নিকটে মুখ রাখিয়া অস্তের কর্ণগোচর না হয়, এমন চুপি চুপি কথা বলা । কানে খাট হওয়া [ কানে—খাট ( অল্পদুর হইতেও শুনিবার মত শক্তি না থাকা ) । তুল—ইং— short of hearing ] fF, GR5:7th Hi বলিলে শুনিতে ন পাওয়া ; মৃদ্ধশব্দ শুনিবার শক্তি হইতে বঞ্চিত হওয়া ; কানে কম শুনিতে পাওয়া। কানে তাল ধরা, তালী ধরা, লাগা—শ্রবণ-দ্বার বন্ধ হওয়া : শুনিতে | না পাওয়া ; ভয়ানক শব্দ বা গোলমাল অথবা হেতু কানে শুনিতে না পাওয়া । কণনে তোলা [ কানে—তোলা = উত্থাপন করা ; উল্লেখ করা) কর্ণগোচর করা ; শুনান । কানে ধরা [ কান ধরা দ্রঃ ] কৃত অপরাধ বা ভুল চুকের জন্য কর্ণ স্পর্শ করিয়া সাবধান হওয়া ; ভবিষ্যতে তার সেরাপ না করিবার জষ্ঠ প্রতিজ্ঞারূঢ় হওয়া। কানে ধরিয়া , বলা—বিশেষ ভাবে বা তিরস্কার-পূর্বক মনোযোগ আকর্ষণ করিয়া কিছু বলা বা উপদেশ দেওয়া । প্র—"তাহাকে কানে ধরে : বলে না দিলে শুনবে না" ৷ ২ ৷ সনিৰ্ব্বন্ধ অনুরোধ করিয়া বলা । প্র—সেকি তাহার কানে ধরিয়া বলিতে গিয়াছিল। কানে লাগ —কানে ভাল লাগা : শ্রবণ-সুখকর হওয়া । কানে লেগে থাকা—যাহা শুনা গিয়াছে : তাহার স্মৃতি পুৰ্ব্ববৎ বজায় থাকা ; শ্রত ! বিষয়ের মধুরধ্বনি মনে থাকা । কান সারা —কান খাড়া করা ; ( তাহা হইতে ) সতর্ক হওয়া ; সাবধান হওয়া। প্ৰ—“উভলেজ । করিয়া সারিল দুই কাণ । এক লাফে আকাশে উঠিল হনুমান ॥"-কৃত্তিবাস। : হাড়ীকান—কানের পাতার শঙ্খ : কর্ণ- , বেষ্টনীর কানের যে স্থান হাড়ীর মত গভীর । । [স্ত্রীলোকে হাড়ীকানে চৌদানী প্রভৃতি মাকড়ী- ' জাতীয় অলঙ্কার পরিয়া থাকে ] । কানক (ক্ ) { কনক+অ বিকারার্থে, অ৭ ] বিণ, সুবর্ণরচিত ; কনকনিৰ্ম্মিত । ২। সুবর্ণসম্বন্ধীয়। ৩। বি, ক্লী, জয়পালের বীচি । , কানড়, কানোড় (ড়, ) বিষধর সর্পবিশেষ : ; কাদোড় সাপ । কানড় (কানোড়, ) { সং–কর্ণটি ] বি, স্ত্রীলোকের কেশবিস্তাসবিশেষ ; কর্ণাটপ্রদেশপ্রসিদ্ধ খোপা (ইহাতে প্রথম চুল ১৬ গুচ্ছ : করিয়া পরে চার চার গুচ্ছে এক একটি বিননী । পাকাইয়া চার বিননী দ্বারা কুণ্ডলাকৃতি থোপ বাধা হয় ) । কানড় থোপাও বলে। প্র— "কানড় খোপায় কনকচাপ পাটের থোপ দোলে।"-কবিক । | ७११ কানড়, কানড়া ( ড়, ) { ম:—কণৈর (कुषः कब्रशैब्र ?) देशांग्न छैफ्रांप्र१ अtनकल्ले কনের ও কনেড়র মত অথবা কম্বোট, ( গীলোৎপল ) হইতে কন্নোর—কানড় । কবিপ্রসিদ্ধ হেতু কনোট সম্ভব ] বি, নীলপদ্ম। প্র—“কানডা কুসুম জিনি খামর্চাদের বদন । থানি।”—চণ্ডীদাস । ২ । সর্পবিশেষ। ৩। সৰ্পের কুণ্ডলীর মত গোপ বাধিবার ধারা ( কানড় দ্র: ) । প্র—“কানড ছাদে কবরী বান্ধে, নবমল্লিকার মালে।”—চণ্ডীদাস । [সং-কর্ণাট ] কর্ণাটদেশীয় । প্র—”কাপড় কাণ্ডার আড়ে কানড়। রূপসী ।”—ঘনরাম। ৫ । [ সঙ্গীতে কর্ণাট রাগ : হি—কান্সড ] : রাগবিশেষ ; মেঘরাগের পুত্ররূপে কল্পিত । ৬। বিণ, কর্ণাট। স্ত্রী, কানড়ী (কর্ণাট রাগিণী ; হি-কাহাড়ী ) । কানন (কানোন) [ কানি ( দীপ্তি পাওয়া ) +অন (অধি, সংজ্ঞার্থে, তনটু) যেখানে বৃক্ষमयूइ cशांडा भाग्न ] बि, द्रौ, रन ; १श्न : অরণ্য। নন্দন কানন--স্বর্গের বন ; যথায় দেবপুষ্প পারিজাতাদির বৃক্ষ বিরাজিত। ২ । সুসজ্জিত বৃহৎ উপবন : বিলাস উদ্যান । কাননারি { কানন ( তাহার ) অরি—৬তৎ ] বি. পুং, শমীবৃক্ষ। এই বৃক্ষ হইতে অগ্নি নির্গত হইয়া বন দুগ্ধ করে বলিয়| এই নাম । কানা (সং-কাণ (একচক্ষু হীন ) : হি– } কাণ । বাং কাণ ও হয় ] বিণ. চক্ষুহীন । , প্র-একচোখ কাণী ; দুচোখ কাণী ৷ ২ ৷ . একচক্ষুহীন। ৩। ফুল ; সচ্ছিদ্র । প্র-কাণ। গঙী, কাণাকড়ি। ৪। পোকা ধরা। স্ত্রী, কানী । (হি—কানী = এক চক্ষুহীনা। প্র--"অন্ধী . কানী লংড়ী লী –হিন্দী গান ) । কানা । কড়ি-ফুটা কড়ি যাহা বাজারে চলে না। : ২ । ক্রমাগত ব্যবহারে ফুঢ়া কড়ি। যে খেলে । সে কানা কড়িতেও খেলে—আস্ত কড়িতেই পেলা যায় কারণ তাং গড়াইয়া । দিলে হাতের কৌশলে চিত উপুড় করা চলে কিন্তু কানা কড়িতে তাহা চলে না ; তবে যদি | দক্ষ খেলোয়াড় হয়, তাহা হইলে সে | কানা কড়িও ইচ্ছামত চালিতে পারে। (তাহা । হইতে) আসলে বা মুলে প্রকৃত খেলোয়াড় । বা ক্রীড়াকুশল হওয়া চাই। কানা করে দেওয়া—অন্ধকারে অন্তরালেফেলিয়া দেওয়া | যাহাতেসে প্রতিযোগিতায় অমুকুলপথ দেখিতে ন পায় । চেষ্টা ব্যর্থ করা ; পরাস্ত করা । কানা খোড়ার একগুণ বাড়া— | প্রবচন ] অন্ধ ও খল্প ব্যক্তি চক্ষু ও চরণের | অভাব কর্ণ, ত্বক আদি ইন্দ্রির দ্বারা মোচন করিবার চেষ্টা করার ক্রমে সেগুলি সাধারণ কানা অপেক্ষ সমধিক পরিস্ফুট হয় এবং তাহাজের অনুভূতি, বুদ্ধিশক্তি প্রভৃতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন— [প্রবচন) চোখই নাই তার পদ্মচক্ষু হইৰে কি ? স্বতরাং লোচনহীনের পদ্মলোচন নাম রাখা যেমন নিরর্থক বা হাস্তাম্পদ উদ্ধপ নিরর্থক নামকরণ উপহাসাম্পদ। এই প্রবচন একটু বিকৃত হইয়া কোন কোন স্থলে দাড়াইয়াছে—“গাদ ছেলের নাম পদ্মলোচন ৷” কানার ম| [ গর্ভস্থ সন্তান অন্ধ বলিয়া এই নাম ] প্রথম অন্তঃসত্ত্বা নারী । ( নব-গর্ভিণী যে জননীর প্রাপ্ত হইয়াছেন তাহ জানাইবার জষ্ঠ পুত্রবতী পুরদ্ধাগণ র্তাহাকে "কানার ম৷” বলিয়া সম্বোধন করেন ) । চকরা-কানা [চক--র (তুচ্ছার্থে)কান] বিণ,চক্ষু থাকিতে কানা । কানামাছি । কানা (চোখ বধিয়া )-মাছি (মাছির মত ঘুরিতে থাকে বলিয়া ) ] ধি, ছেলেদের খেলা ; যে খেলায় একজন চোখ বাধিয়া কানামাছি সাজে ও আৱ সকলে তাহাকে চতুদিক হইতে স্পর্শ করে, সে ঘুরিয়া ঘুরিয়া যে স্পর্শ করিতে থাকে তাহাকে ধরিতে চেষ্টা করে । খেলার ৰোল —“কানামাছি ভো ভো” ইত্যাদি । কানা ( সং–কর্ণ ; ফা-কিনা ; হি— কিনার। } বি, কিনারা ; ধার ; প্রান্ত ৷ ২ ৷ পাত্রাদির মুথের বেড়, ঘের বা গল ; হাড়ীর ভাঙ্গা পার । প্র—“মেরেছ মেরেছ কলসীর কানা ৷" কানায় কানায়—( পাত্রের ) মুখে মুখে ; গলায় গলায় ; কিনার পর্য্যন্ত ; ছাপাছাপি । প্ৰ—“কানায় কানায় পূর্ণ আমার পরাণ”—ভর ভাদরে (রবি) । কানা ভাঙ্গা হাড়ী অর্থে—কানীয়ে । কানায়ে দ্রঃ । কানাই [সং-কৃষ্ণ ; হি—কইণই ; পা-প্রাকৃ —কণহে। “বাস্থদেবেহরিংকণ হো কেসবে ১ঞ্চপাণ্যধ-অভিধানপ্লদীপিক ] বি, শ্ৰীকৃষ্ণ । গ্ৰ—“তার মুখে ছাই দিয়া সে কানাই আসিবে তোমা নিকটে ।"-চণ্ডীদাস । কানাই বলাই-কৃষ্ণ বলরাম। প্র— "কানাই বলাই দুটি ভাই”—গান। না বিয়িয়ে কানায়ের মা-যশোদা কৃষ্ণকে উদরে ধারণ না করিয়াও র্তাহার জননী হইয়াছিলেন। সেইরূপ পরের ছেলের মা হওয়া ; ছেলে না হইলেও ছেলের "ঝক্কি পোয়ান" অর্থাৎ মায়ের কৰ্ত্তব্যপালনের কষ্ট স্বীকার করা। কানাকানি, নী { কর্ণাকণি। কাণাকণি এ: ) বি, এক কাণ হইতে অন্তের কাণ ; পরম্পর চুপেচুপে বলাবলি । প্ৰ—“ছুটি সোহাগের বাণী, যদি হত কাণাকাশি, যদি ওই মালাখানি পরাতে গলে । এখন ফিরাবে আর কিসের ছলে ॥”—রবীন্দ্র ।