পাতা:বাঙ্গালা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক বক্তৃতা.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“বাঙ্গালা ভাষা ও সাহিত্য । হইয়াছে। গঙ্গা বিষ্ণুপাদপদ্ম হইতে নিঃস্থত হইয়া হিমালয় প্রদেশে যেখানে প্রকৃতিদেবী বন্য ও অসংস্কৃত, কিন্তু অত্যন্ত স্বাভাবিক পরম রমণীয় সৌন্দৰ্য ধারণ করিয়াছেন, সেখানে হিমালয়দুহিতা পাৰ্বতীর কীৰ্ত্তিস্থান দিয়া যেমন প্রবাহিত হইতেছেন, তেমনি বাঙ্গাল কবিতা মুকুন্দরামের চণ্ডী মহাকাব্যে বন্য ও অসংস্কৃত অথচ অত্যন্ত স্বাভাবিক পরম রমণীয় সৌন্দৰ্য্য ধারণ করতঃ মহামায়ার অদ্ভুত কীৰ্ত্তি কীৰ্ত্তন করিতেছে। গঙ্গা যেমন বিচুর গ্রামের সন্নিহিত হইয়া এক দিকে বাল্মীকির তপোবন ও অন্য দিকে রামচন্দ্রের কীৰ্ত্তিস্থান অযোধ্যাপ্ৰদেশ, দুইয়ের মধ্য দিয়া প্ৰবাহিত হইতেছেন, তেমনি বাঙ্গাল কবিতা বাল্মীকিকে আদর্শ করিয়া লিখিত কৃত্তিবাসের রামায়ণে রামগুণ গান করিয়া ভারতভুমিকে পুণ্যভূমি করিতেছে। গঙ্গা যেমন প্ৰয়াগাতীর্থে আগমন করিয়া কৃষ্ণাৰ্জনের কীৰ্ত্তিস্থান দিয়া প্ৰবাহিত যমুনার সঙ্গে সম্মিলিত হইয়াছেন, তেমনি বাঙ্গালাকবিতা মধ্যকালে কৃষ্ণাৰ্জনের গুণকীৰ্ত্তনকারী কাশীরাম দাসের মহাভারতরূপ শাখানদী হইতে বিলক্ষণ পুষ্টিলাভ করিয়াছে। গঙ্গা যেমন কাশীধামের নিকট প্রবাহিত হইয়া বিশ্বেশ্বর ও অন্নপূর্ণার স্তুতিরবে। পূর্ণ হইতেছেন, তেমনি বাঙ্গালাকবিতা রামেশ্বর ও রামপ্ৰসাদের গ্রন্থে শিবদুর্গার স্তুতিরবে পূর্ণ আছে। আবার * ঐ গঙ্গা কৃষ্ণচন্দ্রের কীৰ্ত্তিস্থল নবদ্বীপের নিকট দিয়া যেরূপ প্রবাহিত হইতেছেন, সেইরূপ বাঙ্গালাকবিতা ভারতচন্দ্রের গ্রন্থে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কীৰ্ত্তি কীৰ্ত্তন করিতেছে। ভাগীরথী যেমন একদিকে চুচুড়া, ফরাসডাঙ্গা ও শ্ৰীরামপুর, অন্যদিকে