পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৯
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

অচিরে জলপ্লাবিত হইয়া গেল। ফেব্রুয়ারী মাসে জাতীয় বাহিনী যুদ্ধে অবতীর্ণ হইয়াছিল; এবং পাঁচমাস যুদ্ধ করিয়া কয়েকটি স্থান অধিকার করিবার পর অকস্মাৎ প্রাকৃতিক বিপর্য্যয়ে তাহাদের অগ্রগতি বন্দ হইয়া গেল। বর্ষার প্রকোপে আজাদগভর্ণমেণ্টের সহিত সংবাদ আদান প্রদান ও স্থগিত হইল। সৈন্য বাহিনীর রসদ ও যুদ্ধের উপকরণ সম্ভার না আসাতে জুলাই মাসেই সৈন্যদল পশ্চাদপসরণ করিতে বাধ্য হইল। সুযোগ পাইয়া ব্রিটিশ সৈন্যগণ ব্রহ্ম অভিমুখে অগ্রসর হইতে লাগিল। যে নবীন উৎসাহ লইয়া জাতীয় বাহিনী যুদ্ধে অবতীর্ণ হইয়াছিল, পশ্চাদপসরণ করিতে বাধ্য হইলেও, তাহা একেবারে নির্ব্বাপিত না হইয়া নূতন সুযোগের অপেক্ষা করিতে লাগিল। একথা নিশ্চয়রূপে বলা যাইতে পারে, যে ‘ইনফল জয়ে’ বাধা প্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও আজাদগভর্ণমেণ্ট, জাতীয় বাহিনী এবং পূর্ব্ব এশিয়ার ৩০ লক্ষ প্রবাসী ভারতীয় এই আঘাত নির্ব্বিকার চিত্তে সহ্য করিলেন। বিন্দুমাত্র ভগ্নোৎসাহ না হইয়া দ্বিগুণ উৎসাহের সহিত তাঁহারা নূতনপথে এই যুদ্ধ পরিচালনা করিতে কৃতসংকল্প হইলেন। অগণিত অর্থ ও নূতন নূতন সৈন্য সংগ্রহ হইতে লাগিল। আক্রমণাত্মক অভিযানের জন্য সকলেই প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের বিপুল সৈন্য-বাহিনী এবং অপরিমিত সমর-সম্ভার উপস্থিত হওয়াতে দেশীয় বাহিনী তাহাদের অগ্রগতি রোধ করিতে অসমর্থ হইল এবং ইংরাজ সৈন্য ইরাবতী উত্তীর্ণ হইয়া মান্দালাই ও রেঙ্গুন অভিমুখে ধাবিত হইতে লাগিল।