পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

যুগান্তর আনয়ন করিয়াছিল তাহা নহে, তাঁহার বিষবৃক্ষ প্রভৃতি উপন্যাস ইংরাজি ও অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হইয়া পাশ্চাত্য জগতে যথেষ্ট সমাদর লাভ করিয়াছে। বঙ্কিমচন্দ্রের অমর সঙ্গীত “বন্দেমাতরম্‌” স্বদেশীযুগে বিলাতের উচ্চপদস্থ রাজপুরুষগণের হৃদয়েও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করিয়াছিল। ইংরাজ কবি Grey ‘Elegy' ও অন্যান্য কবিতা রচনা করিয়া যশস্বী হইয়াছেন। সমালোচকগণ বলিয়া থাকেন তিনি যদি একমাত্র ‘Elegy কবিতাটি ভিন্ন আর কোনও কবিতা রচনা না করিতেন তাহা হইলেও তাহার নাম কাব্যজগতে চিরস্মরণীয় হইয়া থাকিত। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দেমাতরম’ সন্ধেও একথা নিঃসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে। একমাত্র এই জাতীয় সঙ্গীতের জন্যই সমগ্র বাঙ্গালীজাতি তাঁহাকে হৃদয়-মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করিয়া চিরদিন পূজার অর্থ প্রদান করিত। বস্তুতঃ এরূপ দেশাত্মবোধপূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত জগতের আর কোনও ভাষায় রচিত হইয়াছে বলিয়া মনে হয়না।

 বিশ্বের দরবারে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের দান অতুলনীয়। তাঁহার অমর গ্রন্থ ‘গীতাঞ্জলি’ ইংরাজিভাষায় অনূদিত হইবার সঙ্গে সঙ্গেই তাহার যশঃ সমগ্র ইংলণ্ডে পরিব্যাপ্ত হয়। তৎপরে সুধীগণের বিচারে এই গ্রন্থ তদানীন্তন গীতিকাব্যগুলির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বিবেচিত হইলে তিনি যখন নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত হন, তখন তাহার কবি-প্রতিভা দর্শন করিয়া সমস্ত সভ্যজগৎ তাঁহার শিরে জয়মাল্য প্রদান করে।