পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৩
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

অপরাধীদিগকে দণ্ডস্বরূপ অবরুদ্ধ রাখিবার নিমিত্ত ইংরাজদিগের কলিকাতাস্থ দুর্গে একটি ক্ষুদ্র গৃহ ছিল। গৃহটি দৈর্ঘ্য বিস্তারে বারহাতের অধিক ছিল না এবং তাহাতে দুইটি মাত্র গবাক্ষ ছিল। ঐতিহাসিক মিষ্টার হলওয়েল লিখিয়া গিয়াছেন, সিরাজের সৈন্যগণের নিকট পরাজিত হইয়া অন্যান্য ইংরাজগণ পলায়ন করিবার পরে, দুর্গে যে অল্পসংখ্যক ইংরাজ ছিলেন, তাঁহারা প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়া অবশেষে আত্মসমর্পণ করেন। ইহার পরে ১৪৬ জন ইংরাজকে নবাবপক্ষের জনৈক সেনানায়ক সিরাজের অজ্ঞাতসারে উপরোক্ত গৃহে একরাত্রির জন্য অবরুদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিলেন। পরদিন প্রভাতে গৃহদ্বার উন্মুক্ত হইলে দেখা গেল বন্দীগণের মধ্যে ২৩জন মাত্র জীবিত আছেন।

 বহুদিন পর্য্যন্ত এই ঐতিহাসিক ঘটনার সত্যাসত্য নির্দ্ধারণ করিবার জন্য কোনও বাঙ্গালী গবেষণা কার্য্যে প্রবৃত্ত হন নাই। কিন্তু পরবর্ত্তী ঐতিহাসিকগণ অনুসন্ধান করিয়া যখন জানিতে পারিলেন যে ঘটনাটি কল্পনা-প্রসূত এমন কি কেহ কেহ এই সঙ্কীর্ণ গৃহের আয়তন এবং এক একজন মনুষ্যের সাধারণ আয়তনের সাহায্যে প্রমাণ করিলেন যে এই অল্পায়তন গৃহে কোনও মতেই ১৪৬ জন লোকের স্থান হইতে পারে না, তখন দেশবাসিগণ এই কাহিনীকে আর ঐতিহাসিক সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে পারিলেন না। মহানগরীর বক্ষ হইতে ইহার অপসারণের জন্য অনেক চেষ্টাও হইল। ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্ট কোনও কথায় কর্ণপাত করিলেন না।