পাতা:বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র - মহেন্দ্রনাথ গুহ.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৭
বাঙ্গালীর প্রতিভা ও সুভাষচন্দ্র

অবস্থায় আমার কর্ত্তব্য কি আমার অন্তঃকরণকে আমি বার বার এই প্রশ্ন করিতেছি। আমার অদৃষ্টে যাহা কিছু ঘটিতেছে তাহাই কি আমি মানিয়া লইব? অথবা অন্যায় অসঙ্গত এবং আইনবিরুদ্ধ কার্য্যের তীব্র প্রতিবাদ করিব? অনেক চিন্তা করিয়া আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি যে এই সকল প্রতিকূল অবস্থার নিকটে বশ্যতা স্বীকার করা আমার পক্ষে কোনও মতে সম্ভবপর নহে। এই সকল নীতি-বিরুদ্ধ ও আইন-বিরুদ্ধ কার্য্য করিলে যে পরিমাণে ধর্ম্মহানি হইতে পারে, ইহাদিগকে মানিয়া লইলে তাহা অপেক্ষা অধিকতর মহাপাতকের সঞ্চার হইবে সুতরাং ইহার প্রতিবাদ আমাকে করিতেই হইবে।

 কিন্তু আমি এতদিন যে ভাবে প্রতিবাদ করিয়াছি, তাহা আমার অরণ্যে রোদন করা হইয়াছে। সংবাদ পত্রে আন্দোলন, বক্তৃতা মঞ্চ হইতে নানাবিধ যুক্তি প্রদর্শন, গভর্ণমেণ্টের নিকটে আবেদন নিবেদন, ব্যবস্থাপক সভায় অশেষবিধ দাবির উল্লেখ প্রভৃতি নানাবিধ উপায় অবলম্বন করিয়াও আমি সুফল লাভ করিতে পারি নাই। এখন আমার পক্ষে একটি মাত্র পথ উন্মুক্ত আছে—তাহা হইতেছে—অনশন ধর্ম্মঘট।

 অনশন অবলম্বন করিলে কি লাভ হইবে তাহাও আমি চিন্তা করিয়া দেখিয়াছি। অনশন অবলম্বন করিয়া ব্রিটিশগভর্ণমেণ্টের নিকট হইতে আমি যে বিন্দুমাত্র সহানুভূতি প্রাপ্ত হইবনা তাহাও আমি বিশেষরূপে অবগত আছি। সুতরাং অনশনব্রত অবলম্বন করিয়া আমি লাভবান হইবনা ইহাও একপ্রকার সুনিশ্চিত।