পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

কোন উৎসব-অনুষ্ঠানেরই ত্রুটি করেন নাই। বহুদিন পরে সিরাজের পিতা জৈনুদ্দীন মুর্শিদাবাদে পদার্পণ করেন।

 মহারাষ্ট্রীয়েরা এই সময় উপর্য্যুপরি বঙ্গভূমি আক্রমণ করিয়া বাঙ্গালার নবাবকে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিল। ভাস্কর পণ্ডিতের নৃশংস হত্যা তাহাদিগের ক্রোধানলে ইন্ধন সংযোেগ করাইয়া দিল। এই হত্যার প্রতিশােধ গ্রহণার্থ রঘুজী ভোঁসলে বিপুল বাহিনী লইয়া বাঙ্গালা আক্রমণ করেন।

 রঘুজীর সহিত যুদ্ধ-বিগ্রহকালে নবাব আলিবর্দ্দী, সমসের, সর্দ্দার খাঁ প্রভৃতি আফগান সেনাপতিদিগকে মহারাষ্ট্রীয়দিগের সহিত যড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকিতে দেখিয়া, তাহাদিগকে কর্ম্মচ্যুত করেন। আফগান সামন্তবর্গ মুস্তাফার পরাজয়ের পর হইতেই এক প্রকার বিদ্রোহিভাব ধারণ করিয়াছিল, তাহার উপর আবার এইরূপ অপমানিত হইয়া প্রতিশােধ গ্রহণের সুযােগ অনুসন্ধান করিতে লাগিল।

 “যাদৃশী ভাবনা যস্য সিদ্ধির্ভবতি তাদৃশী”—ভাবনার অনুকূল সিদ্ধিলাভ হইয়া থাকে। পরবর্ত্তী ঘটনাবলী হইতে পাঠকগণ দেখিবেন, আফগানদিগের সিদ্ধিলাভ কি প্রকারে হইয়াছিল।

 সিরাজের বিবাহােৎসবে মুর্শিদাবাদে অবস্থানকালে, নওয়াজিস ও সৈয়দের ধন-রত্নের প্রতি জৈনুদ্দীনের লােলুপ-দৃষ্টি পড়ে। তিনি পাটনায় প্রত্যাগত হইয়া ভ্রাতৃদ্বয়কে অপর্য্যাপ্ত ধনশালী দেখিয়া, পাছে তাহারা নবাবের মৃত্যুর পরে অর্থবলে সৈন্য সংগ্রহ করিয়া, সিংহাসন অধিকার করিয়া বসে, এই আশঙ্কায় এক নূতন উপায় উদ্ভাবন করিলেন। সমসের খাঁ, সর্দ্দার খাঁ প্রভৃতি সদলে পদচ্যুত হইবার পরে দ্বারভাঙ্গায় অবস্থিতি করিতেছিলেন। জৈনুদ্দীন ইঁহাদিগের সাহায্যে বলবৃদ্ধি ও ভবিষ্যতে রাজ্যলাভের সুবিধা হইবার সম্ভাবনা দেখিয়া, নবাবের নিকট