পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

সন্ধান করিয়া দেয়—মরণই শাশ্বত সুখের পন্থা দেখাইয়া দেয়—ভক্তিমতী অনুতাপানলে শুদ্ধান্তঃকরণা আমিনা সেই আনন্দ পাইবার জন্য লালায়িত—তাই আজ তাঁহার নিকট মরণ কত সুখের—সেই সুখ-আশায় আজ তাঁহার হৃদয় আনন্দোৎফুল্ল। পাপীর মরণের বড় ভয়—মরণের পর সে কোন্ অজ্ঞাতদেশে কোন্ বিরাট্ মহিমময় পুরুষের সম্মুখে দণ্ডায়মান হইয়া, আপনার দুষ্কৃত কার্যের ফলভােগ করিবে ভাবিয়া অস্থির হয়—আমিনার সে ভয় আজ নাই, তাই বলিতেছিলাম আমিনার মুখে মরণ ভীতির চিহ্ণ নাই—বাক্যে বা কার্য্যেও তাহাই প্রকাশ পাইতেছে—তাহার হৃদয়ােত্থিত প্রার্থনায় তাহাই সূচিত হইতেছে। তাই মীরণ-প্রেরিত দূত কি করিয়া অসহায়া দুর্ব্বলা বেগমদিগকে নিমজ্জিত করিবে ভাবিয়াই স্থির করিতে পারিতেছে না—তখন তাহার নিকট প্রাণ ভিক্ষা চাহিলে—অর্থের প্রলােভন দেখাইলে—সে যে মিথ্যা কথা বলিতে পারিত না, তাহা বোধ হয় না; কিন্তু বেগমেরা তাহা করেন নাই—আমিনার মহত্ত্বও এইখানে— আর তাই ভক্তের ভগবান্ নিরপরাধ রমণীদের শান্তির জন্য তাহাদের প্রদত্ত অভিসম্পাত দ্বারা মীরণের মৃত্যু সংঘটিত করিয়াছিলেন।

২৮