পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গ্‌লার বেগম

(যাহার বার্ষিক আয় ১২,০০০৲ টাকা) ব্যতীত অন্যূন ৫ লক্ষ টাকা পাইয়াছিলেন।[১]

 বুদ্ধিমতী মণিবেগম কোপনস্বভাবা ছিলেন; কিন্তু তৎকালে পরদুঃখকাতরা রাণী ভবানী ব্যতীত তাঁহার ন্যায় দানশীলা রমণী কেহ ছিলেন না বলিলে অত্যুক্তি হয় না। এই দানশীলতার জন্য সকলে তাঁহাকে “মাদর-ই-কোম্পানী” অর্থাৎ ‘কোম্পানীর মাতা' নামে অভিহিত করিত। স্নেহময়ী জননীর আখ্যায় আখ্যাত হওয়া যে কম সৌভাগ্যের কথা নয়, এ কথা বলাই বাহুল্য। আমরা এখানে মণিবেগমের দানশীলতার একটী নিদর্শনের উল্লেখ করিলাম।

 এক সময়ে তাঁহার একজন সামান্য দাসী কিছু টাকার অভাববশতঃ স্বীয় কন্যার বিবাহ দিতে পারিতেছিল না। এই কথা কোনরূপে মণি বেগমের কর্ণে প্রবেশ করে। তিনি ইহা শুনিবামাত্র ঐ দাসীকে ৭০।৮০টী মোহর ও অন্যান্য আবশ্যক দ্রব্যাদি পাঠাইয়া দিয়াছিলেন। এই ঘটনাটী মুতাক্ষরীণে[২] বিশেষরূপে বর্ণিত আছে। মুতাক্ষরীণ-অনুবাদক গোলাম হোসেন এই সময়ে মুর্শিদাবাদে ছিলেন। তাঁহার সমক্ষেই এই ঘটনা ঘটিয়াছিল।

 নবাব-নাজিমদিগের প্রধানা মহিষীকে ‘গর্দ্দিনাসীন’ বেগম বলে। গর্দ্দিনাসীন বেগমেরা বাৎসরিক লক্ষ টাকা বৃত্তি পাইতেন। মণিবেগম এই বৃত্তির সমস্ত টাকা দানাদি পুণ্যকার্য্যে ব্যয় করিতেন।

৪৪


  1. ঐতিহাসিক নিখিলবাবু তাঁহার ‘মুর্শিদাবাদ কাহিনীর’ ২৬৩ পৃষ্ঠায় লিখিয়াছেন— “মণিবেগমের বৃত্তি হইতে অনেক টাকা সঞ্চিত হইয়াছিল। গবর্মেণ্ট তাহা নবাব নাজিমকে প্রদান করেন নাই।”
  2. Mutaqherin-iii-147.