পাতা:বাঙ্গ্‌লার বেগম - ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘসিটী

নিষ্প্রয়ােজন। তবে একথা নিঃসন্দেহ যে, ইংরাজের মাথার উপর দিয়া যে ঝটিকা প্রবাহিত হইয়াছিল, রাজমহলেই তাহায় মেঘ দেখা দিয়াছিল।

 ইহার পর ইংরাজের সহিত সিরাজের যে সকল যুদ্ধ হয়, মুর্শিদাবাদে যে যুগান্তরকারী নাটকের অভিনয় হয়, কলিকাতার দুর্গে ইংরাজেরা সিরাজের হস্তে যে সকল নিগ্রহ ভােগ করেন, তৎসমুদয়ের সহিত প্রত্যক্ষ্যভাবে ঘসিটি বেগমের কোন সম্বন্ধ নাই; কিন্তু পরােক্ষভাবে ঐগুলির সহিত বেগমের সম্বন্ধ আছে; কাজেই এস্থলে সে সকল ঘটনার কিছু কিছু উল্লেখ করা নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক হইবে না।

 ঘসিটি বেগমের পরলােকগত স্বামীর দেওয়ান রাজল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাসকে আশ্রয় দেওয়াই ইংরাজের সহিত সিরাজের সঙ্ঘর্ষের প্রধান কারণ বলিয়া অনেকে নির্দ্দেশ করেন; ইহা যে নিতান্ত অমূলক তাহা নহে; কারণ এই ঘটনার পরে ভারতীয় ইংরাজ কর্ম্মচারীদিগের সহিত বিলাতের ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর বাের্ড অব ডাইরেক্টারদিগের যে সকল পত্র-ব্যবহার হইয়াছিল, ঐ সকল পত্রের উত্তর- প্রত্যুত্তরে ইংরাজের মুখেই তাহা ব্যক্ত হইয়াছে।

 আমিনা-চরিত্র বিবৃতি কালে ঘসিটির শোচনীয় পরিণামের কথা আমরা উল্লেখ করিয়াছি, এক্ষণে হলওয়েল সাহেব ১৭৬০ খৃঃ অব্দে কলিকাতা হইতে মুরাদাবাদে ওয়ারেণ হেষ্টিংশ সাহেবকে ঘসিটির পরিণামের যে অমানুষিক চিত্র অঙ্কিত করিয়া পত্র বিখিয়াছিলেন, নিম্নে আমরা তাহার মর্ম্মানুবাদ করিয়া দিলাম।

 পলাশীর যুদ্ধের পর ঘসিটি ও আমিনা বন্দিনী হইয়া ঢাকায় প্রেরিত হন। মীরজাফর আলিবর্দ্দীর বংশের উচ্ছেদসাধনার্থ ঢাকার শাসনকর্ত্তা জেসারৎ খাঁকে তাঁহাদিগের বিনাশের জন্য লিখিয়া পাঠাইলেন। এই পত্র

৫৭