পাতা:বামুনের মেয়ে-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামুনের মেয়ে 88 উছলিয়া উঠিল ; কিন্তু কথাগুলা শুনাষ্টল যেমন তীক্ষ্ণ, তেমনি শক্ত,— কহিল, গেলেই বা কৈ তার জমা-খরচ রাখচে বলুন ? যে জাতই মানে না, তার আবার যাওয়া আর থাকা ! গোলক হাসিবার চেষ্টা করিলেন, কিন্তু মুখ তা’র কালে হইয়া উঠল। বলিলেন, তামার সঙ্গে এই সব বুঝি পরামর্শ চলে ? সন্ধা খিল্‌ খিল্‌ করিয়া হাসিয়া উঠিয়া বলিল, হায় হায়, ঠাকুর্দ', স আপনাদেরই গ্রাহ করে না–কুকুর-বেড়ালের সামিল মনে করে, তা আমি ! এই বলিয়া সে বাদ-প্রতিবাদের অপেক্ষামাত্র না করিয়া চক্ষের পলকে ঘরের মধ্যে অন্তৰ্হিত হশয়া গেল । জগদ্ধাত্রী আর সহ করিতে পারিলেন না, ধমক দিয়া উঠিলেন, হতভাগী ! পরের ছেলের নামে তুই মিথ্যে অপবাদ দিস ! তাকে ক না জানে ? সে কখনো এ-কথা বলেনি--আমি গঙ্গার জলে দাড়িয়ে বলতে পারি। ঘরের মধ্য হইতে কোন প্রত্যুত্তর আসিল না । গালক কহিলেন, সী স্থগো, আজকালকার ছেলে-মেয়ের সব এমনিই টে। তা বেশ, না হয় কুকুর-বেড়ালই হলুম ; কিন্তু একটা কথা বলে যাই আজ, আর মেয়ের বিয়ে দিতে দেরী করিস্নে । যেখানে তাক দিয়ে ফেলে পাপ চুকিয়ে দে, চুকিয়ে দে। জগদ্ধাত্রী কাদিয়া ফেলিয়া বলিলেন, দাও ন মামা একটা দেখেশুনে। আর যে আমি ভাবতে পারিনে। গোলক মাথা নাড়িতে নাড়িতে বলিলেন, আচ্ছা, দখি ; কিন্তু কি জ্ঞানিস্ মা, এক ময়ে, দূরে বিয়ে দিয়ে কিছু•ে থাপতে পারবিনে, কেঁদে-কেটে মরে যাবি। আমাদের স্বভাবের ঘরে পাত্রের বয়স দেখতে গেলে চলে না। তবে কাছাকাছি হয়, ছ’বেল চাখের দেখাটা দেখতে পাস ত তার চেয়ে সুখ আর নেই।