পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ. Σ8 বারীদ্রের আত্মকাহিনী প্রাসাদ, সাম্রাজ্য হারাইয়া তাহারই গুপ্ত কোটরে এতটুকু হইয়া থাকিব ? মানুষ নিজের জড় রুদ্র স্বরূপটি এমনি আগ্রহে আকড়িয়া আছে যে, সে আপনার অখণ্ডতাকে, পূর্ণতাকে ভয় করে, ভাবে বুঝি তাহার রাজবেশ পরিলে তাহার ছিন্ন কস্থাটুকু হারাইয়া যাইবে। কিন্তু আমরা নিজের আনন্দের শক্তির জ্ঞানের ঘর জানি না বলিয়াই আমাদের মন প্ৰাণ এমন ছোট যে, যে মানুষ যখনই উপরের ভাণ্ডারের চাবি পাইয়াছে, তাহারই আশার এ দীনত্ব তখনই ঘুচিয়া গিয়াছে। আজ যদি তোমায় কেহ অনন্তের জ্ঞানে আনন্দ স্থির করিয়া শক্তির ঈশিত্বে বসাইয়া এই দেহ মন প্ৰাণ তোমারই হাতের যন্ত্র করিয়া দেয়, তাহার পরীক্ষণেই সে রাজ-শ্ৰী তোমার হারাইয়া গেলেও স্মৃতি যাইবে না, তুমি ঐ রাজ্য ফিরিয়া পাইতে সাধনায় বসিবে । এ নূতন যোগের বড় নূতন কথা এই যে, ভগবানকে এক আধ বার দেখা নয়, এই নিম্নমূল জীবনকে উৰ্দ্ধমূল করিয়া ভগবানে পাওয়া, মন চিত্ত প্রাণ ও দেহের উপাদান অনু-পরমাণু বদলাইয়া, উপরের শুদ্ধ তেজোময় সত্ত্বায় রূপান্তর করিয়া লওয়া, তাহার পর সেই দিব্য আধারে ভগবানকে মূৰ্ত্ত করা। এইখানে এ যোগ জীবনের যোগ, মানুষকে তার স্বরাজ্য দিবার যোগ, পূর্ণ মানুযের সহজ দেবত্ব, অখণ্ড শিবত্ব তাহাকে ফিরাইয়া দিবার যোগ । এমন কিছু সত্য সত্যই যদি কাহারও জীবনের দুয়ার খুলিয়া আসে, যদি কেহ এই নিজের, এই বৈকুণ্ঠের জ্যোতিধাম আপনি সত্ত্বার মাঝে উখিত দেখে, তবে সে মানুষের কি হয় বল দেখি। ধৰ্ম্ম যাহার কাছে সত্য, জীবন্ত, প্ৰকট ও নিত্য আস্বাদনের ধন, তাহার মৰ্ম্মকথা মৰ্ম্মী ছাড়া কে বুঝিবে ? পণ্ডিচারীতে আরও দুইবার আসিয়া সাধনা করিয়া যাহা দেখিলাম তাহাতে আর দ্বিধা সন্দেহের স্থান রহিল না, মানুষে এ দেবত্ব হয়, আর তাহাই এ সৃষ্টির উত্তম রহস্য। প্ৰথমে ইহা জন কয়েক শক্তিমান আধারে রূপ নিবে, তাহার পর জগতে সে শক্তি কাজ করিয়া করিয়া