পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বারীতেন্দ্রর আত্মকাহিনী 2ܠ পু। কিছু কিছু জানি বই কি । তুমি নাও না, যা চাও তা” আমারই কাছে পাবে। আমি । কখন দিবেন ? পু। এখনি । আমি । দিন, আমি নেব । তিনি আমায় একটি নির্জন কক্ষে লইয়া দ্বার দিলেন। অন্ধকারে মুখামুখী দু’জনে দুই পৃথক আসনে বসিলাম । তিনি বলিলেন, “চক্ষু মুদিয়া থাক, চাহিয়া দেখিও না, কিছুই ভাবিও না।” প্ৰায় পনর মিনিট পরে চক্ষু চাহিতে বলিলে চাহিয়া দেখিলাম, তেমনি দু’জনে বসিয়া আছি। তিনি বলিলেন, “কিছু অনুভব করলে কি ?” আমি । না। ঘুম পাচ্ছিল। পু। ভাবনা নেই, তোমার হবে। আমি তো অবাক! কিছুই হ’লে না, আর বলে কিনা। “হবে” ! ইহারই নাম বিষ্ণুভাস্কর লেলে। রবীন্দ্রের কবিতায় আছে ‘ক্ষ্যাপা খুজে খুজে মরে পরশ পাথর', এই পরশ পাথর অন্বেষণে পাগল দেশ দেশান্তর ঘুরিত, আর উজ্জল নুড়ি পাইলেই কোমরের লৌহ-শিকলে ঠেকাইয়া ফেলিয়া দিত, বহুদিন ব্যর্থ হইয়া হইয়া নিরাশায় অনভ্যাসে শিকলের দিকে আর চাহিত না । একদিন কোমরের দিকে দৃষ্টি পড়ায় ক্ষ্যাপা দেখিল, কবে কোন মাহেন্দ্রক্ষণে পরশমণি ঠেকিয়া তাহার লোহার শিকল সোনার হইয়া গিয়াছে। হেলায় সে মণি ফেলিয়া দিয়াছে, চাহিয়া দেখে নাই। আমারও এই মহাপুরুষের সঙ্গ লাভ সেই ক্ষ্যাপার মত, তেমনি হেলায় অযত্নে পাওয়া, তেমনি লোহাকে সোনা করা কাণ্ড । লেলোকে পাইয়া আমার শত-ছিদ্র ডুবোন-তরীও শেষে কিনা পারের মুখে চলিল ।