পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

፥ፖ বারীদ্রের আত্মকাহিনী করিয়া সোজাসুজি মন্ত্র গ্রহণের আব্দার জানাইলাম। সাধুরা আর যাই হউন আর নাই হউন, করুণার অবতার সন্দেহ নাই ; নাহিলে আমার মত অহঙ্কারী, কৰ্ম্মপাগল, অশুদ্ধ মানুষকে লেলের মত সাধক যাচিয়া অমন অমূল্য বস্তু কি দেয়? যখন সাখারিয়া অন্বেষণে বাহির হইলাম তখন লেলে আমায় ষ্টেশনে দিয়া গেলেন, সমস্ত পথ সস্নেহে আমার হাত ধরিয়া আসিয়াছিলেন। মুক্ত সাধকের সে প্ৰেমভরা আত্মহারা চাহনি—আমার জন্য সে আকুল ব্যাকুল ভাব, কখন ভুলিবার নয়। লেলের চক্ষের দৃষ্টি ছিল স্বতঃই বিহ্বল, অন্তমুখ ও অনিদিষ্টতারক । আমাকে পাইয়া তিনি যেন বহুকালের হারানো প্রিয়জন পাইয়াছিলেন । সাখারিয়াও তাই, আমায় দেখিবা মাত্রই কেমন যেন ভাল বাসিয়া ফেলিলেন । সাখারিয়ার আসল নাম বিশ্বেশ্বরানন্দ স্বামী, তিনি গৌরকান্তি দীর্ঘাকার পুরুষ, বয়স ষাটের কাছাকাছি, মুখ সদা হাস্য মাখা, দেহ গৈরিকবৃত, ঋজু ও সরল, মুণ্ডিত শির। সন্ন্যাসীর হাতে দণ্ড ও কঁাধে সর্বদা মিছরির ঝোলা ! ইনি যৌবনে সিপাহী বিদ্রোহের সময়, ঝাঁসির রাণীর সহিত একত্র ইংরাজ বাহিনীর সহিত যুদ্ধ করিয়াছিলেন, রাণীর শেষ জীবনের অনেক ব্যাপারই তাহার মুখে শুনিয়াছি। রাণীর মৃত্যুর পর নিজ হস্তে সে পবিত্ৰ দেহ চিতায় তুলিয়া দিয়া মনের বেদনায় তিনি সন্ন্যাস গ্ৰহণ করেন। তখন অশুভ কাল, উত্তরায়ণের সময়, সে সময়ে মন্ত্র বা দীক্ষা দেওয়া দূরে থাক, কোন মঙ্গল কাৰ্য্যই হয় না । আমার কথায় হাসিয়া সাখারিয়া ঝোলা হইতে মিছরি বাহির করিয়া খাইতে দিলেন । আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাকে মিছরি খাওয়ান ইহার একটা ব্যাধির মধ্যে, তাই নাম হইয়াছে সাখারিয়া (সাখর-চিনি) স্বামী। এই মঠের ব্যয় বৎসরে বার হাজার টাকা । স্বামীজী এক একবার টাকার তাগাদায় বাহির হন, গুজরাতি মহাজন শেঠদের বাড়ী চড়াও হইয়া টাকা এক রকম জবরদস্তি কাড়িয়া লন, তাহার পর আশ্রমে ফিরিয়া সেই কষ্টাৰ্জিত অত অর্থ দুই দিনের