পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাখারিয়া স্বামী s মহাভোজে আবালবৃদ্ধকে খাওয়াইয়া উড়াইয়া দেন। সে দিন আশ্রমের পথ মাড়াইয়া রাজা গজা লাট বেলাট কাহারও তাহার কাছে মেঠাই না খাইয়া পলাইবার জো নাই। সরিয়া পড়িবার চেষ্টা করিলে সাধু গ্রেপ্তার করিয়া আশ্রম মধ্যে আটক করেন। এত দুঃখের ভিক্ষায় ও পৰ্যটনে এ অর্থ সংগ্ৰহ করিবারই বা দরকার কি, আর এমন করিয়া দুই এক দিনে উড়াইবারই বা অর্থ কি ? বিধাতা জানেন। আর জানেন এই অদ্ভুত মানুষটির অন্তর-পুরুষ। তাহার পর নিত্য পনর বিশ জন সন্ন্যাসী অতিথির সেবা করিয়া এ মঠ চলিত যে টাকায়, তাহা আপনিই অযাচিত ভাবে আসিত । আমায় ঝোলা হইতে মিছরি খাওয়াইয়া, সাখারিয়া বাবা অনুযোগের স্বরে বলিলেন, “অকালে মন্ত্র দেওয়া হয় না, বেটা ।” আমি । না হয়, আমি ফিরে যাই । আমার অপেক্ষা করবার সময় নেই । সা। আচ্ছা, থাকো থাকে ; দেখি । তাতার পর টাে টাে করিয়া ব্ৰাহ্মণের ঘরে ঘরে ঘুরিয়া পাজি পুথি উণ্টাইয়াও যখন অকালে মন্ত্র দিবার বিধি মিলিল না, তখন সহাস্যমুখে স্বামীজী ফিরিয়া আসিয়া আমার পিঠ চাপড়াইয়া বলিলেন, “আজি আমার আশ্রমে থাকে, কাল আমি তোমায় মন্ত্র দেবো, তারপর শুভদিনে অনুষ্ঠানাদি সেরে নিলেই হবে।” পরদিন নিৰ্ম্মদায় স্নানান্তে “ওঁ হ্রীং ক্রীং”—ইত্যাদি যুক্ত এক লম্বা শক্তিমন্ত্র কাণে পাইয়া দ্বিপ্রহরে সাধের বাঙলার উদ্দেশ্যে যাত্ৰা করিলাম। যাত্রাকালে আশীৰ্ব্বাদ করিতে আসিলে দেখিলাম। বাবার চোখে জল ; তিনি কঁাধের গৈরিক উত্তরীয় দেখাইয়া বলিলেন, “এটা নেবে ?” আমি গৈরিক লইতে রাজী হইলাম না, কি জানি কেন যেন এতকালের এত সাধের গৈরিক লাইতে গিয়া এখন আমার মন বেঁকিয়া বসিল ; হাত উঠিল না। সকালে বাবা মন্ত্র দিবার কালে উপদেশ দিয়াছেন মাছ, মাংস, পেয়াজ ইত্যাদি উত্তেজক পদার্থ ত্যাগ করিতে। দ্বিপ্রহরে আহারে বসিবার