পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se বারীদ্রের আত্মকাহিনী পূর্বে আড়ালে ডাকিয়া সস্নেহ-হস্ত কঁাধে রাখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “বেটা পেঁয়াজ খাওগে ? মেরা কোঠারিমে ছিপায়কে ভুজয়োয়ায় দে৷ ” সৰ্ব্বত্যাগী মুক্ত পুরুষের এ হৃদয়ের বন্ধন দেখিয়া আমারও চোখের পাতা ভিজিয়া আসিল । সেই দিনই চান্দোত হইতে মাণিকতলার বাগানের দুৰ্দমনীয় টানে বাহির হইয়া পড়িলাম। তখন আমার জনৈক বন্ধু থানার উচ্চ রাজ-কৰ্ম্মচারী। র্তাহার বাসায় দুই এক রাত্রি কাটাইয়াছিলাম। লেলে বলিয়াছিলেন, “নির্জন ঘরে দুয়ার দিয়া ইষ্টদেবতার সান্নিধ্য জ্ঞান লইয়া সপ্ৰেমে ধ্যান করিবে । ভাবিবে, এত কাছে সে-রূপ দাড়াইয়া আছে যে হাত বাড়ালেই পাও ।” তাহাই করিতে গিয়া প্ৰথম দিনই সাধন খুলিয়া এক অদ্ভুত ব্যাপার আরম্ভ হইল, হঠাৎ ভয়ে কণ্টকিত দেহে আমি একদৌড়ে একেবারে বন্ধুর বৈঠকখানায় ! একটা “হাঁ হাঁ কি কি” রব পড়িয়া গেল, আমি যাহা হউক একটা কৈফিয়তে ব্যাপারটা ঢাকিয়া লইলাম। তাহার পর লেলের সহিত আর একবার সাক্ষাৎ করিয়া, সাধনার স্পষ্ট ইঙ্গিত লইবার আশায়, তাহাকে পত্ৰ দিয় থানায় অপেক্ষা করিতে লাগিলাম, লেলে। কিন্তু পরদিনও আসিল্লেন না । তখন আমি বান্দরায় অনারেবল ভাণ্ডারকরের বাসায় লেলের সন্ধানে আসিয়া শুনিলাম, লেলে আমারই উদ্দেশ্যে থানায় গিয়াছেন। সে যাত্র গুরু-দর্শনে বঞ্চিত হইয়া, আমি মনে সন্দেহ, দ্বিধা, ভয়, আনন্দ, বিস্ময় লইয়া অগত্যা শ্যামা বঙ্গভূমির কোলে ফিরিলাম। সেই হইতে বাগানে নিত্য ধ্যানে বসিতে লাগিলাম । গাছ পালার মধ্যে ধ্যান করিতে গিয়া সমস্ত দেহে রোমাঞ্চ হইত, মনে হইত জগৎ চরাচর যেন সজীব চেতন, যেন কি এক মহাচৈতন্য আমায় সহস্ৰ নেত্ৰে দেখিতেছে। তখন কিন্তু সমস্ত মনটা ভয়ানক একটা কাণ্ড বাধাইবার আশায় দেশের কাজে পাগল, ধ্যানে বসিয়াও মন টিকিত না । কলিকাতায় তখন আমার সেজদাদা অরবিন্দ ন্যাশনাল কলেজের অধ্যক্ষ ও বন্দেমাতরম কাগজের কর্ণধার। আমি তখন মাণিকতলার