পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 বারীদ্রের আত্মকাহিনী বিপ্লব কেন্দ্রগুলিকে একসূত্ৰে গাঁথিতে হইবে। তখন পুণা বোম্বাইয়ের বিপ্লব-নেতারাই বাঙলার কৰ্ম্মীদের মানস আদর্শ, সবাই জানিমহারাষ্ট্ৰ প্ৰস্তুত, কেবল বাঙলার জন্য অপেক্ষা করিতেছে, বাঙলা না উঠিলে, উঠিবে না। তাই মনে মনে ভাবিতাম, “ওরা এমনই প্ৰস্তুত হইয়া আছেই যদি, তবে আমাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে না কেন ?” এই সুযোগ পাইয়া মনে হইল, “সুরাটে অনেক নেতাই তো একত্ৰ হইবেন, সেই সময়ে সবাইকে ডাকিয়া একটা নিখিল ভারত বিপ্লবপন্থীর পঞ্চায়েত বসাইতে হইবে। দেখি স্যাঙাৎরা কে কত দূর তলোয়ার কিরিচ শানাইয়াছে।” বোম্বো-মেল খড়গপুরে আসিয়া থামিল। ভিড়ে যে যেখানে পারিয়াছি উঠিয়াছি। সেই পথটুকুই আসিতে আমায় শীত ও ক্ষুধা দুই-ই ভীম বিক্ৰমে চাপিয়া ধরিল। এমন সময় অরবিন্দ তাহার গাড়ীতে আমায় ডাকিয়া পাঠাইলেন, গিয়া দেখি সেটাও তৃতীয় শ্ৰেণী, ভিতরে নরক গুলজার। অনেক রাজনীতিক ভবঘুরেই সেখানে জুটিয়াছেন, কে কে তাহা এখন আর স্মরণ নাই। শ্যামসুন্দর বাবু জড়াইয়া দিলেন ও সামনে একঠোঙা অমৃতোপম জলখাবার আলিয়া ধরিলেন । বলা বাহুল্য সেই হইতে প্ৰসাদ-লোভী। আমি তাহাদের গাড়ীতেই রহিয়া গেলাম। মাঝে যেন কোথায় কোন ষ্টেসন হইতে এক অপূর্ব ব্যাপার আরম্ভ হইল। প্ৰতি ষ্টেসন লোকে লোকারণ্য, প্ৰতি ষ্টেসনে ফুলের মালা, লুচি মণ্ডা মেঠাই ও চা ! বন্দেমাতরম ধ্বনিতে কাণে তালা লাগিয়া গেল, আর চা জলখাবার খাইতে খাইতে সকলেরই পেট হইল ঢোল। অনেক ষ্টেসনে বহু লোক নিরাশ হইয়া ফিরিয়া গিয়াছিল, অরবিন্দের সাক্ষাৎ, প্ৰাণ ভরিয়া বড় একটা কেহই পায় নাই। কারণ সবারই ধারণা ছিল যে, দেশের একটা এতবড় গণ্যমান্য মানুষ, নিশ্চয় প্ৰথম শ্রেণীতেই অন্ততঃ দ্বিতীয় শ্রেণীতে আসিতেছেন। কাজেই প্ৰথম শ্রেণী হইতে খুজিতে খুজিতে, এই