পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 বারীদ্রের আত্মকাহিনী হঠাৎ একজন পাশী যুবক একখানা বেণ্টড-চেয়ার তুলিয়া তিলককে মারিতে উঠিল। আর যাইবে কোথা । গ্যালারী হইতে লাফাইয়া পড়িয়া মার মার রবে দক্ষিণী যুবকের দল বেদীর দিকে চলিল, তাহার আরম্ভেই কোথা হইতে একপাটি নাকৰ্ষাকানো মারাঠী নাগরা সাই করিয়া আসিয়া সুরেন্দ্রনাথের মাথা ঘোঁসিয়া ছিটকাইয়া মেটার ঘাড়ে গিয়া পড়িল । সেই নাগরখানা হইল বারুদে দেশলাই কাঠি, “কাণের নিকট দিয়া মরমে পশিয়া” সেই কুচক্ৰী নাগরাখানাই সেবার কংগ্রেসের যবনিকাপাত করিয়া ছাড়িল । আমি তখন নীরব শান্ত অরবিন্দের পিছনে দাড়াইয়া সব দেখিতেছি। তেমন নরদৌড় আর জীবনে কখন দেখি নাই, বোধহয় আর কখন দেখিবও না। সুরেন্দ্ৰ ছুটিতেছেন, গোখলে ছুটিতেছেন, মেটা ভূপেন্দ্ৰ যে যার চৌকি ছাড়িয়া এ-দুয়ার ও-দুয়ার দিয়া বাহির হইয়া পড়িতেছেন। এদিকে ঘেরা খোয়াড়ে স্ত্রী-দর্শকেরা মিহি সুরে আৰ্ত্ত চীৎকার সুরু করিয়া দিয়াছেন। কে কাহার খোজ রাখে ? সত্যেন্দ্র ও আমি আরও সাত আটজন বাঙ্গালী যুবককে লইয়া অরবিন্দকে ঘিরিয়া দাড়াইয়া আছি। যখন তিনি ধীর পদে মণ্ডপ হইতে বাহির হইয়া পড়িলেন, তখন বেদীর নিকট হইতে যাইবার সময় উপর হইতে পার্শাঁ যুবক একজন তাহার উদ্দেশে থুথু ফেলিল। তখনকার মত দলাদলি এখন আছে কি না সন্দেহ, তখন দলের জন্য মানুষ এত হীন হইত যে, তাহা বলিয়া বুঝাইবার নয়। কারণ তখনও গোমাংসের মত বিলাতী পলিটিক্স ভারতবাসীর পেটে বদহজমের উদগার তুলিতেছিল, রাজনীতি কূটনীতি হইতে পারে। কিন্তু দুনীতিও যে হয় তাহ পাশ্চাত্যই জগতকে শিখাইয়াছে। কংগ্রেস ভাঙিয়া গেল, গরমদল নিজেদের আলাদা convocation বসাইয়া ইতিকৰ্ত্তব্য স্থির করিতে লাগিলেন, মডারেটরা প্ৰাণের দায়ে প্রহরী বেষ্টিত হইয়া সভা করিলেন ভাঙ্গা কংগ্রেস মণ্ডপে, আর তাহার নাম দিলেন “জাতীয় মহাসভা’। রাসবিহারী বাবুর সভাপতির