পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V9R বারীদ্রের আত্মকাহিনী স্যার সুব খাসিরাও যাদবের বাড়ীতে। লেলের সহিত সেই প্ৰথম আলাপের পর বরোদায় তিনটি সভায় অরবিন্দ বক্তৃতা দেন, একবার মহারাজার সহিত সাক্ষাৎ করেন, তাহার পর আর কেহ অরবিন্দকে পায় নাই। তখন দেশময় তাহাকে চায়। বরোদায় কত মানুষ র্তাহাকে দেখিতে উন্মুখ। লেলে কিন্তু বলিলেন, “আমার সাধনা তোমায় দেব, কিন্তু একান্তে সাত দিন আমার সঙ্গে থাক।” অরবিন্দ বলিলেন, “কোথায় ?” লেলে । আমি গোপন স্থানের ব্যবস্থা করবো । তাহাই হইল। হঠাৎ অরবিন্দ উধাও হইলেন। চারিদিকে পাগলের মত শহর সমেত মানুষ র্যাহাকে খুজিতেছে, তিনি কোথাও নাই । যেখানে লেলের নির্দেশে আমরা গেলাম। সে এক বিরাট জনহীন পুৱী। সেখানে লেলের স্ত্রী রাধেন, অরবিন্দ, লেলে ও আমি খাই। র্তাহারা দুজনেই দিবারাত্র মুখোমুখী ধ্যানে কাটান। আমায়ও লেলে বসিবার জন্য পীড়াপীড়ি করেন, আমি মাঝে মাঝে বসি বটে। কিন্তু মাথায় তখন বিপ্লবের পোকা গজ গজ করিতেছে ; তাহারা আমায় স্থির হইয়া বসিতে দিবে কেন ? কাজেই কোন গতিকে ফাক পাইলেই আমি সরিয়া পড়ি এবং একটি তালা ঢালাইয়ের কারখানায় বসিয়া ঢালাইয়ের কাজ দেখি ও শিখি। বোমার বারুদের জন্য পিতলের বা র্কাসার আধার ঢালাই করিতে হইবে, কোথায় তাহা শিখিব তখন আমার কেবল সেই চেষ্টা । ভগবানকে ঠিক তখনই সদ্য সদ্য না পাইলেও আমার চলে, তবে তিনি যদি বোমার কারখানার মিস্ত্রী বা বেঙ্গল ব্যাঙ্কের ভরা লোহার সিন্দুক হইয়া আসিতেন তাহাতে আমার বড় আপত্তি ছিল না। তখন আমার সাধনা খুলিয়াছে বটে, কিন্তু মনে বড় অশুদ্ধি, কত প্ৰবৃত্তির ঢেউ, কত চিন্তা, কত সংকল্পের মাতাল হাওয়া । এই সাৰ দানাদৈত্যের জ্বালায় ধ্যান করা প্ৰায় অসম্ভব । বিক্সের কথা শুনিয়া লেলে বলিলেন, “তোমার মনে প্ৰাণে অশুদ্ধি রয়েছে, কাম রয়েছে, তাই এ বিস্তু।” আমি রাগিয়া গেলাম,