*心 বারীতেন্দ্রর আত্মকাহিনী টিপিয়া বুঝিলাম, ইমার্সন সাহেব লোক মন্দ নহেন, লাল মুখ ও শ্বেত চৰ্ম্মের মধ্যে প্ৰাণটি তার বেশ কোমল রাঙা খুড়ো গোছের, আর আইরিশ ডাক্তার ডয়েলী আমাদের স্নেহময়ী পিসিমা হইবার সম্পূর্ণ উপযুক্ত-যেমন সুরসিক তেমনি দ্যাখন হাসি আবার তেমনি মুক্তহস্ত। শুনা গেল, কয়েদীদিগের অদৃষ্টর লপসী ও জেলভোজ্য কুখাদ্য নাকি ইহার এক কলমের খোচায়, দুধ রুটি ও কালিয়া পোলোয়া মাছ মাংসে পরিণত হইতে পারে। কেবল একটু ঘুম ঘুসে জ্বর বা কাণের ব্যথা বা পেটের কামড়ানী হইলেই হইল, তাহা হইলে সাত দিনের মত ডাক্তার সাহেবের কৃপায় রোগীর অশেষবিধ উদারনৈতিক উন্নতি আনিবাৰ্য্য । শুনিয়া প্ৰাণপক্ষী ধড়ে ফিরিল। যাক তবে উপায় আছে, এ হেন সাহারায়ও পান্থ-পাদপ আছে । ভক্তবৎসল, তোমারই মহিমা, পেটে হাত না পড়িলে তোমার অপার করুণা বুঝে কার সাধ্য। সকালে লপসী আহার, দ্বিপ্রহরে জলবৎ-তরলম দালের সহিত হরেক রকম পাতাবাহারী মাছের ঝোল দিয়া সকঙ্কর আধরাঙা বুকড়ি চালের ভাত। ঝোলটি মাছের বলিয়াই বোধ হইল, কারণ গুড়া-গাড়া মাছ সে পূত জাহ্নবীধারায় সন্তরণ দিয়া স্নান করিতেছিল, তরকারীর অপেক্ষা হরেক রকম পাতাই, এই মৎস্য পাচনের আস্বাদ ও রূপের খোলতাই করিয়াছিল। বেলা চারটার সময় দ্বিপ্রহরেরই দ্বিতীয় সংস্করণ, মাঝে মাঝে একটা তরল টক । কাজেই ডাক্তার ডয়েলীরূপ অধমতারণ বাবা অন্নপূর্ণার শরণ লওয়া ছাড়া গত্যন্তর নাই এটা বেশ বোঝা গেল। পরদিনই ছেলেরা সুপারিনঠনঠন সাহেবকে আহার বিহারের একটু যথাসাধ্য উনিশ বিশ সম্বন্ধে নাড়িয়া চড়িয়া দেখিল বটে, কিন্তু সাহেব বলিলেন, “তঁহাকে জেল কোডের পরিধির মাঝে ন্যায় ও করুণাকে লক্ষ্মণ-গাণ্ডিবদ্ধ জানকীর দশায় রাখিতে হয়, সুতরাং তিনি নাচার ও নিরুপায়।” আমরাও বুঝিলাম এ ক্ষেত্রে ধৰ্ম্মপুত্র যুধিষ্ঠির হইয়া সদা সত্য কথা
পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৬
অবয়ব