পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ বারীদ্রের আত্মকাহিনী আধ মাত্রা অনবধানতােবশে চড়িলেই বার্লির কপিশ চক্ষু আমাদের দিকে দৃকপাত করিতে লাগিল, অমনি আমরা জড়সড় নীরব ভ্যাবাচেকা । দু’চার দিনে কিন্তু ভ্ৰভঙ্গিম ঠামে। সে বক্ৰ কটাক্ষপাতও সহিয়া আসিল, তখন তাহাতে সানায় না দেখিয়া সাহেব ট্যাড়া ট্যাড়া বাঙলায় ধমকাইতে আরম্ভ করিলেন, মাটিতে বসিয়া থাকিলে, কথা বলার অপরাধে দাড় করাইয়া দিতে লাগিলেন । বিচার বা তদন্ত ও সাক্ষী-সাবুদ কি বলিতেছে তাহা আমরা বড় একটা লক্ষ্য করিতাম না। যাহা হইবার তাহা তো জানা কথা, এখন ঐ সব কচকচির মধ্যে কঁহাতক থাকা যায় ? দিনমানে নিত্য বিচার ও সন্ধ্যার সময় আবার গাড়ীবন্দী হইয়া জেল এবং কুঠরীসাৎ হইয়া নিদ্রা । এইভাবে নিত্য সুনাহার করিয়া বাহিরে যাওয়াটা যেন একটা আনন্দমেলা হইয়া দাড়াইল, মনে হইত, বিচার ও তদন্তই না হয় দু’চার বছর চলুক না, এই বা মন্দ কি ? পূর্বেই বলিয়াছি, সি. আই. ডি বিভাগের গোপন বঁধুরা নিত্য জেলখানায় যাতায়াত আরম্ভ করিয়া দিয়াছিলেন। বুড়া বয়সে কচি মেয়ে বিবাহ করিয়া মানুষের যে দুৰ্দশা হয়, গরীব মুটে মজুর হঠাৎ সোণার মোহরের কলস পাইলে চোরের ভয়ে ও লোভের উৎপাতে তাহার যে অবস্থা দাড়ায়, ইহাদের আজ সেই অবস্থা। সবারই চেষ্টা মধুবর্ষণে মন ভুলাইয়া কথার প্যাচে বেসামাল পাইয়া ভুজংভাজাং দিয়া কে কোন আসামীর পেটের কথা কটা বাহির করিতে পারে। সকলের মধ্যে ইনস্পেক্টর শ্যামশূল আলমের এ হিসাবে অক্লান্ত অধ্যবসায়। এমন দিন যাইত না যখন শ্যামশূল আলিপুর জেলে চোয়াল্লিশ ডিগ্রির কুঠরীতে কাণা ভোমরার মত গুনগুন ভন ভন না করিতেছে। কালে চাঁপদাড়িশোভন দন্তলবদনে তাহার হাসি লাগিয়াই আছে, কথায় এত মধু একমাত্র সেই “দিদিশাশুড়ী” রামসদায়ের দেখিয়াছিলাম, অজস্র গালি অপমান অকথা কুকথা শুনিয়াও নির্বিবকার মিয়াসাহেব তেমনি নাছোড়বান্দা । শেষে কবে জানি না r