পাতা:বিক্রমপুর - তৃতীয় বর্ষ.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বৈশাখ ১৩২২]
বিক্রমপুরপ্রসঙ্গ।

 রায় বিপিনবিহারী চক্রবর্তী—বিপিন বিহারী বিক্রমপুরের একজন উজ্জ্বল রত্ন ছিলেন। বিক্রমপুরস্থ পঞ্চসার গ্রামে ১৮৬৭ খৃঃ আগষ্ট মাসে জন্ম গ্রহণ করেন। চেষ্টা যত্ন ও অধ্যবসায় থাকিলে মানুষ কিরূপ ভাবে স্বীয় অবস্থার উন্নতি করিতে পারে বিপিনবিহারীর জীবন তাহার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দরিদ্রের গৃহে জন্ম গ্রহণ করিয়া নানাবিধ প্রতিকূলাবস্থার মধ্য দিয়া ইনি বিদ্যাশিক্ষা করিয়াছিলেন। বিপিন বাবু অবশেষে রুকী ইঞ্জিনিয়ারীং কলেজের শেষ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করিয়াছিলেন। তিনি যুক্ত প্রদেশে সহস্রাধিক মুদ্রা বেতনে ইঞ্জিনিয়ারের পদে নিযুক্ত ছিলেন: ১৯১৩ খৃষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর ইহার মৃত্যু হয়।

 বিক্রমপুরের এইরূপ কত মহাত্মার কীর্তিময় পুণ্য-জীবন কাহিনী আমাদের অজ্ঞাত তাহার অবধি নাই। ৺বিপিন বাবুর একটা বিস্তৃত জীবন-কথা কেহ লিখিয়া পাঠাইলে আমরা তাহা আনন্দের সহিত পত্রস্থ করিব।

 * * * *

 দেশের কথা —দেশের কথা প্রচার করা ‘বিক্রমপুরের প্রধান উদ্দেশ্য। এই নিমিত্তই ধারাবাহিক ক্রমে গ্রাম্য-বিবরণ প্রকাশ করা হইতেছে। প্রত্যেক গ্রামের লোকেরা যদি নিজ নিজ গ্রামের উল্লেখযোগ্য সংবাদ, স্বাস্থ্য, ফসল, রাস্তাঘাট, বিদ্যালয়, স্ত্রীশিক্ষার বিষয়, পুষ্করিণী, ডোবা,—খাল বিলের অবস্থা, মাম‌্লা মোকদ্দমার বিবরণ, গ্রাম্য মৃত ও জীবিত খ্যাতনামা পণ্ডিত, উচ্চপদস্থ রাজকর্ম্মচারী, ব্যবসায়ী-শিল্পী প্রভৃতির কার্য্য-প্রণালী শিল্পের বিবরণ, ধান-চাউল ইত্যাদি দর, বদমায়েস ইত্যাদির উপদ্রব, গ্রাম্য লোকের সাধারণ হিতজনক কার্যের কথা ও তৎসঙ্গে প্রবাসী ও দেশবাসী সঙ্গতি সম্পন্ন ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা লিখিয়া পাঠান, তাহা হইলে পল্লীগ্রামের প্রকৃত অবস্থা জ্ঞাত হইতে পারা যায়। উত্তর ও দক্ষিণ উভয় বিক্রমপুর বাসী শিক্ষিত ভদ্র মহোদয়গণের এ বিষয় মনোযোগী হওয়া কর্তব্য। বিক্রমপুরে সাহায্যে বিক্রমপুরের গ্রাম্য দুঃখ দুর্দশা ও অভাব অভিযোগ প্রচারের ব্যবস্থা হইলে সে সকলের প্রতীকারের উপায়ও নানারূপে নির্দিষ্ট হইতে পারে। এ বিষয়ে শিক্ষিত গ্রামবাসীরা কখনও উদাসীন হইবেন না। বলা বাহুল্য যে সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাস ও লিখিয়া পাঠাইতে হইবে।