পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yb7ʼ <র্বষ্টি সেখানে পাথরে কাঠে কাপড়ে নানা ধাতু দ্রব্যে এরা বিচিত্র অলঙ্কার সমস্ত দেশে ছড়িয়ে রেখেচে কেবল এদের মেয়েদের গায়েই অলঙ্কার নেই। আমাদের দেশে সাধারণত্ব দেখা যায় অলঙ্কত জিনিষের প্ৰধান রচনাস্থান পুরোণো সহরগুলি যেখানে মুসলমান বা হিন্দু প্ৰভাব সংহত ছিল, -যেমন দিল্লি, আগ্রা, ঢাকা, কাশী, মাদুরা প্ৰভৃতি জায়গা । এখানে সে রকম বোধ হ’ল না । এখানে শিল্পকাজ কম-বেশি সর্বত্র ও সর্ব সাধারণের মধ্যে ছড়ানো । তার মানে এখানকার লোক ধনীর ফরমাসে নয় নিজের আনন্দেই নিজের চারদিককে সজিত করে। কতকটা জাপানের মতো। তার কারণ, অল্প-পরিসর দ্বীপের মধ্যে আইডিয়া এবং বিদ্যা ছড়িয়ে যেতে বিলম্ব হয় না। তা ছাড়া এদের মধ্যে জাতিগত ঐক্য। সেই সমজাতীয় মনোবৃত্তিতে শক্তির সাম্য দেখা যায়। দ্বীপ মাত্রের একটি স্বাভাবিক বিশেষত্ব এই যে সেখানকার মানুষ সমুদ্র বেষ্টিত হ’য়ে বহুকাল নিজের বিশেষ নৈপুণ্যকে অব্যাঘাতে ঘনীভূত করতে ও তাকে রক্ষা করতে পারে। আমাদের অতিবিস্তুত ভারতবর্ষে এককালে যা প্রচুর হয়ে উৎপন্ন হয়। অন্তকালে তা ছড়িয়ে নষ্ট হ’য়ে যায়। তাই আমাদের দেশে অজন্তা আছে অজস্তার কালকেই আঁকড়ে, কণারক আছে কণারকেরই যুগে,-তারা আর একাল পৰ্য্যন্ত এসে পৌছতে পারলে না। শুধু তাই নয়, তত্ত্বজ্ঞান ভারতীয় মনের প্রধান সম্পদ। কিন্তু বহু দূরে দূরে উপনিষদের বা শঙ্করাচাৰ্য্যের কালে তা ভাগে ভাগে লগ্ন হ’য়ে রইল। একালে আমরা শুধু তাই নিয়ে আবৃত্তি করি। কিন্তু তার সৃষ্টিধারা বিচ্ছিন্ন হ’য়ে গেছে। ভারতবর্ষ থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্ৰ হ’য়েও এত শতাব্দী পরেও ভারবর্ষের এত জিনিষ যে এখানে এখনো এমন ক’রে আছে তার কারণ, এটা দ্বীপ, MLLB DDDB BBD DBD DDDS DDSB BBBLDLL BB DS অর্থ নষ্ট হ’তে পারে, একটার দ্বারা আরেকটা চাপা পড়তে পারে, কিন্তু বস্তুটা তবু থেকে যায়। এই কারণেই প্ৰাচীন ভারতের অনেক জিনিষই এখানে আমরা বিশুদ্ধভাবে পাব ব’লে আশা করি। হয়তো এখানকার নাচ এবং নৃত্যমূলক অভিনয়টা সেই জাতের হতেও পারে। এখানকার রাজা [ পৌষ দের বলে আৰ্য্য। আমার বিশ্বাস তার অর্থ, রাজবংশ নিজেদের আর্য্যবংশীয় ব’লেই জানে, তারা স্থানীয় অধিবাসীদের স্বজাতীয় ছিল না। তাই এখানকার রাজাদের ঘরে যে সকল কলা ও অনুষ্ঠান আজো চলে আসচে সেগুলি সন্ধান করলে এমন অনেক জিনিষ পাওয়া যাবে যা আমাদের দেশে লুপ্ত ও বিস্মৃত । এই ছোট দ্বীপে এককালে অনেক রাজা ছিল, তাদের কেউ কেউ ওলন্দাজ আক্রমণে আসন্ন পরাভাবের আশঙ্কায় দলে দলে হাজার হাজার লোক নিঃশেষে আত্মহত্যা ক’রে মরেচে। এখনো রাজোপাধিধারী যে কয়েক জন আছে তারা পুরোনো দামী শামাদানের মতো, যাতে বাতি আর জ্বলে না । তাদের প্রাসাদ ও সাজসজ্জা আছে, তা ছাড়া তারা যেখানে আছে তাকে নগর বলা চলে। কিন্তু এই নগরে আর গ্রামে যে পার্থক্য সে যেন ভাইবোনের পার্থক্যের মতো, তারা এক বাড়ীতেই থাকে, তাদের মাঝে প্রাচীর নেই। আধুনিক ভারতে শিল্পচর্চা প্ৰভৃতি নানা বিষয়ে নগরে গ্রামে ছাড়াছাড়ি । সহরগুলি যে দীপ জালে তার আলো গ্রামে গিয়ে পড়েই না। দেশের সম্পত্তি যেন ভাগ হ’য়ে গেছে, গ্রামের অংশে যেটুকু পড়েচে তাতে আবার অনুষ্ঠান বজায় রাখা সম্ভব নয়। এই কারণে সমস্ত দেশ এক হ’য়ে কোনো শিল্প কোনো বিদ্যাকে রক্ষণ ও পোষণ করতে পারে না। তাই সহরের লোক যখন দেশের কথা ভাবে তখন সহরকেই দেশ ব’লে জানে, গ্রামের লোক দেশের কথা ভাবতেই জানে না। এই বালীতে আমরা মোটরে মোটরে দূরে দূরান্তরে যতই ভ্ৰমণ করি,-নদী, গিরি, বন, শস্তক্ষেত্র ও পল্লীতে সহরে মিলে খুব একটা ঘনিষ্ঠতা দেখতে পাই ; এখানকার সকল মানুষের মধ্যেই যেন এদের সকল সম্পদ छन् । গামেলান সঙ্গীতের কথা পূর্বেই বলেচি। ইতিমধ্যে এ সম্বন্ধে আমাকে চিন্তা করতে হয়েচে। এরা যে আপন মনে সহজ আনন্দে গান গায় না। তার কারণ এদের কণ্ঠসঙ্গীতের অভাব। এরা টিং টং টুং-টাং ক’রে যে বাজনা বাজায় বস্তুত তাতে গান নেই, আছে। তাল । নানা যন্ত্রে এরা তায়েরই বোল দিয়ে চলে। সেই বোল দেবার কোনো