পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদেশী চিত্ৰ


سمه

S সহরের প্রান্তে ছোট একটা পাহাড়ের গায়ে বি, ও, সি, কোম্পানীর ইউরোপীয়ান কৰ্ম্মচারীদের সুন্দর শোভন একই প্যাটার্ণের কতকগুলি বাংলো বাড়ী ; পাহাড়ের গা বাহিয়া অলকিয়া বাকিয়া ছোট একটি পাহাড়ী ঝরণা নীচে ইরাবতীর বিশাল স্রোতে নামিয়া গা ঢালিয়া দিয়াছে ; ঝরণার S SDB BB SDBBDS BB DDDDD SDL SYJ প্ৰকৃতির নিজ হন্তে রোপিত বন-গোলাপ, ডালিয়া ও কঁাটা ফুলের গাছে পাহাড়টি নিত্য শোভিত, নিত্য নূতন। সদ্যাগত মিঃ জোন্সের বাংলোর উপর কোকোবিন গাছের গোলাপী ফুলের গায়ে সুৰ্য্যাস্তের লাল আভা পড়িয়াছে, বারান্দাঘেরা বেড়ার গায়ে ঝুলানো অৰ্কিড ফুলের টব, বারান্দার নীচে স্বল্প সমতল ভূমিতে কতকগুলি দেশী বিলিতি ফুলের গাছ, কতকগুলি পাতাবাহারের চারা । মাঝখানে একটা আরাম কেদারা পড়িয়া, জোন্স সাহেব নভেলের পাতায় মগ্ন হইয়া আছেন, সামনে একটা ছোট তেপায়ার উপর গোটকয়েক খুঁই ফুল আর একটা কঁাচের গেলাসে লাল সিরাপ । সাহেব অন্যমনস্ক ভাবে মাঝে মাঝে গোটকয়েক ফুল নাকে তুলিয়া তাকিতেছেন, মাঝে মাঝে গেলাসটি হাতে ধরিয়া চুমুক দিতেছেন। দেশ হইতে অতিদূরে, ব্ৰহ্মদেশের এই ক্ষুদ্র সহর সাহেবের মনকে নানাভাবে প্রলুদ্ধ করিয়া তুলিয়াছিল। দেশে যেখানে সামান্য কেরাণী গিরির উমেদার হইয়া হয়ত জীবনের অধিকাংশ ভাগই কাটিয়া যাইত, সেখান হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পৃথিবীর প্রান্তভাগে, এই কুলী মুটে মজুরের উপর অবাধ রাজত্ব, উপরন্তু দুই হাজার টাকার মাসিক সেলামী পাইয়া, সাহেব পরম তৃপ্তি এবং আভিজাত্য-গৌরবে আপনার প্রভুত্ব চালাইয়া, নিৰ্ব্বিকার চিত্তে ব্ৰহ্মদেশের রূপস্নাস পানে বিভোর হইয়াছিলেন । ve -শ্ৰীসুরুচিবালা রায় মৃদু বায়ু সঞ্চালনে গাছ হইতে দু’চারটা কোকোবিন ফুল ঝরিয়া ঝরিয়া সাহেবের মাথায় ও বইএর পাতায় টপ টপ করিয়া পড়িতেই সাহেব মুখ তুলিয়া চাহিলেন। সূৰ্য্যাস্তের লাল আভা পাহাড়খানিকে বায়োস্কোপের ছবির ন্যায় ফুটাইয়া তুলিয়াছে, সাহেব মুগ্ধ হইয়া সেই দৃশ্যের পানে তাকাইয়া রহিলেন। অ্যাক-বাক পাহাড়ী পথখানি দিয়া কত লোক উঠিতেছে নামিতেছে, কত তরুণ কত তরুণী দল বাধিয়া, গল্প হাসির ফোয়ারা তুলিয়া লাল বালুর পথে রূপের জ্যোতি ছড়াইয়া যাইতেছে। সকালে যে যুবতী বা তরুণী ঝুড়ি হাতে চিনাবাদামের ক্ষেতে কাজ করিতে গিয়াছে, বা সারাদিন পথে পথে ফিরি করিয়া বেড়াইয়াছে, তারও বেনারসী লুঙ্গি, বা সিস্কের ব্লাউসের মূল্য কোনও ধনীর কন্যা অপেক্ষা নুনি নহে। কে জমিদার দুহিতা, কে বা পথের ফিরিওয়ালী, কিম্বা ক্ষেতের মজুরণী, সন্ধ্যাবেলার মিলন-মেলায় তাহা বুঝিবার ক্ষমতা কাহারো নাই। সাহেব বায়োস্কোপের ফিল্মে অ্যাকা। এই অপূর্ব রূপসীদের পানে চাহিয়া রছিলেন । অধিক রাত্রে স্বপ্ন দেখিয়া সাহেব সহসা জাগিয়া উঠিলেন। জ্যোৎস্না-দীপ্ত পথে তরুণ বৰ্ম্ম যুবকেরা, ম্যাণ্ডোলিন বা বেহালা বাজাইতে বাজাইতে তখন নৈশ বিহারে বাহির হইয়াছে ;-মাথায় খোপার উপর ও খোপার চারিদিকে সুগন্ধি ফুল ও লতাপাতার নীচে : শুভ্ৰ জ্যোৎস্না-মাখানো মুখগুলি জানালা হইতে দেখিয়া, সঙ্গিনী ব্ৰহ্ম-কুমারীগণকে পরী বলিয়া সাহেবের ভ্ৰম হইতে লাগিল । শয্যা ছাড়িয়া সাহেব বারান্দায় আসিয়া ইজিচেয়ার টানিয়া বসিলেন। R কয়েক মাস কাটিয়া গিয়াছে। ফিরিওয়ালী মালোমিয়া তাহার পিঠার হাড়িটি সাহেবের বৈঠকখানার সামনে