পাতা:বিচিত্রা (প্রথম বর্ষ প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SNOR “ইনসিলভেন্সি’ ত কেউ নেবে না। কিন্তু সাবধান, “ক্রেডিটে”র চরমসীমা না দেখে, ধারের উচ্চতম শৃঙ্গে না উঠে, কখনো “ইনসিলভেন্সি’নিও না। যদি নিজের নামেধার নিতে অসুবিধা হয়, বেনামি করে নিয়ো-হয়, সেবাব্রত সমিতির সেক্রেটারী হয়ে, নাহয় লিমিটেড কোম্পানীর ম্যানেজার হ’য়ে। অবশ্য, “ক্রেডিট’ বঁচিয়ে রাখতে হলে দশটা ধারের মধ্যে দুটো ধারও পরিশোধ করতে হবে, অন্তত আংশিক ভাবে। তা”। তার জন্য ভাবনা কেন? ধার দিয়ে ধার পরিশোধ কর । রামের পাওনা যাদুকে দিয়ে শোধ করাও । যাদুর বেলায় কি করবে ? হরির তবিল ধরে টেনো। এমনি করে দরকার হয় ফের রামের কাছে যেয়ো-সে সন্তুষ্টচিত্তেই দেবে-কেননা কাকেও তা তুমি ফাঁকি 5 | || তবে ধারের একটা মস্ত দোষ এই যে তা সুদে বাড়ে। রামের কাছে দশ টাকা ধার করে যাদুর কাছে পঞ্চাশ টাকা ধার করতে হয়। যার ক্রেডিটের সীমা পাঁচশো টাকা মাত্র সে তিন চার কিস্তির বেশী ধার করতে পারবে কেন ? তা ছাড়া জীবিকা নির্বাহের জন্য নতুন ধারাও ত আছে ; সব গুলোই যদি বেড়ে চলে, তা সে চক্ৰ-বৃদ্ধির হিসাবেই হোক আর জোয়াল-বৃদ্ধির হিসাবেই হোক, তাহ’লে উপায় ? উপায়-প্ৰথমত কুসীদগ্ৰহণ সম্বন্ধে আইন, দ্বিতীয়ত তােমাদী, তৃতীয়ত অস্বীকার ও তদুপযুক্ত দলিল, চতুর্থত মানহানির নালিশ এবং পঞ্চমত অজ্ঞাতবাস বা ‘ইনসলভেন্সি”। ধার বহুরূপী। “ওঠানা’, ‘জাকড়’, ‘দাদন” এ সবই ধারের মূৰ্ত্তিভেদ। “একোহহং বহুস্তামঃ” এই মহম্বাক্য ব্ৰহ্ম সম্বন্ধেও যেমন খাটে ধার সম্বন্ধেও তেমনি। চালর্স ল্যাম্বের মতে মনুষ্যজাতির বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগের একমাত্র মূলই হ’চ্ছে ধার; অর্থাৎ মানুষ মূলতঃ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত-এক যারা ধার নেয়, আর যারা ধার দেয়। এ छांकृा एखाद्य cष cबंौ-दिऊांत्रांझे कद्ध ना, उांझे इख्रिश्;-उा- সে রং ধরেই হোক, চেহারা ধরেই হোক, ভাষা ধরেই হোক আর ধৰ্ম্ম ধরেই হোক। অবশ্য এতে একই মানুষ দুই শ্রেণীতে পড়তে পারে। কিন্তু তাতে কিছু আসে যায় না। একই মানুষ <මුණේ [ जांबांछ् মনিবও হতে পারে, চাকরীও হতে পারে, কিন্তু যখন সে মানিব তখন সে চাকর নয়, যখন সে চাকর তখন সে মনিব নয়। উত্তমর্শ ও অধমর্ণের মধ্যে কি ভাবের সম্পর্ক বিদ্যমান তা নিয়ে কিঞ্চিৎ মতদ্বৈধ আছে। তুলনার চক্ষে কারো মতে উত্তমৰ্ণে গৰ্দভ, অধমৰ্ণ শৃগাল-কারো মতে উত্তমর্শ বাস্ত্ৰ, অধমৰ্ণ মেষ । কিন্তু আমার বিশ্বাস এই দুই মতের মধ্যে কোন আত্যন্তিক বিরোধ নেই ;-এদের সমন্বয় করা যেতে পারে। ধারের স্তরে উত্তমৰ্ণে গৰ্দভ, দেনার স্তরে ব্যাস্ত্ৰ-ধারের স্তরে অধমৰ্ণ শৃগাল, দেনার স্তরে মেষ । ধার ও দেনার মধ্যে প্ৰভেদ কি ? যথেষ্ট । ধার বল্লেই মনে পড়ে সেই ছবি যাতে একজন প্ৰশান্ত মুখে টাকা গুনে দিচ্ছে, আর একজন চঞ্চল হন্তে তাই আত্মসাৎ করচে। কিন্তু দেনা বলে মনে পড়ে সেই ছবি যাতে একজন লাঠি হাতে করে দরজায় ঘা দিচ্ছে, আর একজন লুকিয়ে থেকে বলে পাঠাচ্ছে-“বাড়ী নেই”। ধারের মহিমা খািটয়ে বলতে পারি। এমন সাধ্য আমার নেই। যেসব পূজ্যপাদ সাহসিকেরা সীতার না জেনেও কেবল ধারের ভেলায় বুক বাধিয়ে অবলীলাক্রমে সংসারতরঙ্গ ভেদ করে যাচ্চেন, তারাই জানেন ধারের কি মহিমা । তঁদের কাছে শিক্ষানবিশী করাও ভাল। তারা ধার নেবার পূর্বে কখনো করুণ সুরে দুৰ্দশ জানান না। তাদের মুখে তখন এই সব মহৎ বাণীই ধ্বনিত হয়,- ‘পরম্পরের সাহায্যেই সমাজ,’ ‘বন্ধু-পরীক্ষার জন্যই ঋণের সৃষ্টি” “সাময়িক অর্থাভাব কার না ঘটে ?” কিন্তু ধার নেবার পরই তাদের সুর একেবারে বদলে যায়। তখন সেই সব উত্তমর্শদের কাছেই তারা গাইতে থাকেন,-“কুশীদ বৃত্তির মত জঘন্য বৃত্তি আর নেই”। “প্ৰত্যাশাহীন দানই দান, ‘অর্থের চেয়ে কৃতজ্ঞতার মূল্য বেশী।” ধারের মাহাত্ম্য চাৰ্বাক কিছু কিছু বুঝেছিলেন। তাই তিনি ঋণ করেও ঘূত খাবার সুপরামর্শ দিয়েচোন। আর বুঝেছিলেন বিষ্ণু শৰ্ম্ম । তাই তিনি স্পষ্টাক্ষরেই লিখে গেছেন,-“বন্ধু হে, সে দেশে কখনো বাস ক’রোনা যে দেশে বৈদ্য নেই, শ্রোত্ৰিয় নেই, সজলা নদী নেই-কিন্তু যে দেশে ও সবই আছে সে দেশেও কখনো বাস ক’ন্নোনা যদি নাসে দেশে ঋণদাতা কেউ থাকে।”