পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
বিচিত্র গল্প।

 আমিনা কহিল “ভাবনা নাই বুঢ়া, আজ আমি তাহার কাছে দুই থলু আদায় করিয়া দিব, একটিও মাছ দিতে হইবে না।”

 বৃদ্ধ তাহার পালিত কন্যার এত অল্প বয়সে এমন চাতুরী এবং বিষয়বুদ্ধি দেখিয়া পরম প্রীত হইয়া তাহার মাথায় সস্নেহ হাত বুলাইয়া চলিয়া গেল।


চতুর্থ পরিচ্ছেদ।

আশ্চর্য্য এই, দালিয়ার আসা যাওয়া সম্বন্ধে জুলিখার ক্রমে আর আপত্তি রহিল না। ভাবিয়া দেখিলে ইহাতে আশ্চর্য্য নাই।

 কারণ, নদীর যেমন এক দিকে স্রোত এবং আর এক দিকে কূল, রমণীর সেইরূপ হৃদয়াবেগ এবং লােকলজ্জা। কিন্তু সভ্যসমাজের বাহিরে আরাকানের প্রান্তে এখানে লােক কোথায়!

 এখানে কেবল ঋতুপর্য্যায়ে তরু মঞ্জরিত হইতেছে, এবং সম্মুখের নীলা নদী বর্ষায় স্ফীত, শরতে স্বচ্ছ এবং গ্রীষ্মে ক্ষীণ হইতেছে; পাখীর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বরে সমালােচনার লেশমাত্র নাই, এবং দক্ষিণ বায়ু মাঝে মাঝে পরপারের গ্রাম হইতে মানবচক্রের গুঞ্জনধ্বনি বহিয়া আনে কিন্তু কানাকানি আনে না।

 পতিত অট্টালিকার উপরে ক্রমে যেমন অরণ্য জন্মে,