পাতা:বিচিত্র গল্প দ্বিতীয় ভাগ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দালিয়া।
১৩

 প্রথমে দালিয়া কিছু আশ্চর্য্য হইয়া গেল তাহার পরে জুলিখার হিংসাপ্রখর মুখের দিকে চাহিয়া তাহার সমস্ত মুখ হাসিতে ভরিয়া গেল; যেন এত বড় মজার কথা সে ইতিপূর্ব্বে কখনও শােনে নাই—যদি পরিহাস বল ত এই বটে, রাজপুত্রীর উপযুক্ত। কোন কথা নাই বার্ত্তা নাই প্রথম আলাপেই একখানি ছােরার আধখানা একটা জীবন্ত রাজার বক্ষের মধ্যে চালনা করিয়া দিলে এইরূপ অত্যন্ত অন্তরঙ্গ শিষ্টাচারে রাজাটা হঠাৎ কিরূপ অবাক্ হইয়া যায় সেই চিত্র ক্রমাগত তাহার মনে উদিত হইতে লাগিল, এবং তাহার নিঃশব্দ কৌতুক হাসি থাকিয়া থাকিয়া উচ্চহাস্যে পরিণত হইতে লাগিল।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

তাহার পরদিনেই রহমৎশেখ জুলিখাকে গোপনে পত্র লিখিল যে, আরাকানের নুতন রাজা ধীবরের কুটীরে দুই ভগ্নীর সন্ধান পাইয়াছেন, এবং গােপনে আমিনাকে দেখিয়া অত্যন্ত মুগ্ধ হইয়াছেন। তাহাকে বিবাহার্থে অবিলম্বে প্রাসাদে আনিবার আয়ােজন করিতেছেন। প্রতিহিংসার এমন সুন্দর অবসর আর পাওয়া যাইবে না।

 তখন জুলিখা দৃঢ়ভাবে আমিনার হাত ধরিয়া কহিল “ঈশ্বরের ইচ্ছা স্পষ্টই দেখা যাইতেছে। আমিনা, এইবার