তখন আর একটি রমণীমূর্ত্তি গৃহে প্রবেশ করিয়া ফকিরকে প্রণাম করিল।
ফকির প্রথমে অবাক্ তাহার পরে আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠিয়া বলিল “এ যে হৈমবতী!”
নিজের অথবা পরের স্ত্রীকে দেখিয়া এত প্রেম তাহার চক্ষে ইতিপূর্ব্বে কখন প্রকাশ পায় নাই। মনে হইল মূর্ত্তিমতী মুক্তি স্বয়ং আসিয়া উপস্থিত।
পরিশিষ্ট।
আর একটি লোক মুখের উপর শালমুড়ি দিয়া অন্তরাল হইতে দেখিতেছিল। তাহার নাম মাখনলাল। একটি অপরিচিত নিরীহ ব্যক্তিকে নিজপদে অভিষিক্ত দেখিয়া সে এত ক্ষণ পরম সুখানুভব করিতেছিল। অবশেষে যখন হৈমবতীকে উপস্থিত দেখিয়া বুঝিতে পারিল উক্ত নিরপরাধী ব্যক্তি তাহার নিজের ভগ্নীপতি, তখন দয়াপরতন্ত্র হইয়া ঘরে ঢুকিয়া বলিল—না, আপনার লোককে এমন বিপদে ফেলা মহাপাতক। দুই স্ত্রীর প্রতি অঙ্গুলি নির্দ্দেশ করিয়া কহিল, এ আমারি দড়ি, আমারি কলসী।
মাখনলালের এই অসাধারণ মহত্ব ও বীরত্বে পাড়ার লোক আশ্চর্য হইয়া গেল।