পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বরফের রাজ্য (ফিনল্যাণ্ড ) 8ዓ দৌড়ানো যায়-তবে এ সমস্তই অভ্যাসসাপেক্ষ। অনেক দিন ধরে অভ্যাস না করলে ‘শি” পায়ে দিয়ে হঁটিতে গেলে বিপদও আছে। এ ছাড়া বরফের ওপর স্কেটিং ও মোটরগাড়ীর রেসও হয়। এসব খেলায় বিপদও কম নয়-বিশেষ করে শীতকালের শেষের দিকে যখন বরফ গলতে সুরু করে। রবিবারে নাচ-ঘর, থিয়েটার ও সিনেমাতে খুলি ভিড় হয়, হোটেল রেস্তারা ভৰ্ত্তি থাকে। এই গেল শীতকালের কথা । হঠাৎ শীত কেটে যায়, বসন্ত পড়ে, গ্রীষ্ম আসে। এই পরিবর্তন এখানে যেমন আকস্মিক, তেমনই বিস্ময়কর। বসন্ত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রূপ রাতারাতি বদলে যায়-হঠাৎ গাছে নতুন কচিপাতা গজায়, বরফের ফাঁকে ফঁাকে সবুজ ঘাস চোখে পড়ে। পার্কে নানা ধরণের ফুল ফোটে, লোকে ‘শি” ছেড়ে দিয়ে সাইকেলে চেপে কৰ্ম্মস্থানে যায় । ফিনল্যাণ্ডের গ্ৰীষ্মকালে অত্যন্ত বৃষ্টি হয়—আমাদের দেশের বর্ষাকালের মত-গ্রীষ্মকালে গরমে আই-ঢাই করতে হয় না, এ সব দেশের তুলনায় খুব শীত। রাত্রি বলে কোন জিনিস নেই, সূৰ্য্য অন্ত যায় না। গ্ৰীষ্মকালে। অল্পদিন স্থায়ী বলেই গ্রীষ্মের দিনগুলো সবাই খেলাধুলো, আমোদ-প্ৰমোদে কাটায়। হেলসিংফোর্সের অদূরে সমুদ্রবক্ষে ছােট বড় দ্বীপগুলিতে সহরের ধনী ও সচ্ছল মধ্যবিত্ত লোকদের অনেক বাগানবাড়ী আছে-সাধারণ লোকের আমোদ-প্ৰমোদের জন্যেও অনেক ব্যবস্থা আছে। গ্ৰীষ্মকালে সহর থেকে অধিকাংশ লোক সকালে উঠে ষ্টীমারে এই সব দ্বীপে গিয়ে সারাদিন কাটিয়ে সন্ধ্যাবেলা সহরে ফেরে। সচ্ছল অবস্থার লোকে এ কয় মাস ওই সব দ্বীপের বাগানবাড়ীতে কাটায়।