পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইংলেণ্ডের পল্লী বেপরোয় ভাবে বললাম-খুব জানি। অথচ জীবনে একবার মাত্র একটা কৃষকের বাড়ীতে দেশে ওই কাজটা করেছিলাম । বেলিফ বললে গোয়াল পরিষ্কার রাখা ও দুধ দোয়ার জন্যে একটা লোক আমাদের দরকার। আমার মনে হচ্ছে তোমার দ্বারাই কাজ চলবে। মাইনে হ্যািপ্তায় ত্রিশ শিলিং-তার মধ্যে হ্যািপ্তায় সতের শিলিং এর মধ্যে আমি আমাদের এক প্ৰজার বাড়ীতে তোমার খাওয়ার বন্দোবস্ত করে দিতে পারব। গোরুর রাখালি করা কাজটা যদিও আমার মনঃপূত নয়-কিন্তু এদিকেও হাত খালি। নেওয়া যাক কাজটা। হগুপ্তায় খাওয়া বাদে ১৩ শিলিং বাঁচবে-এক মাস এখানে কাজ করলেই আবার রাস্তায় দু' সপ্তাহ চালিয়ে নেবার মত অর্থ সঞ্চয় করতে পারব এখন । বড় রাস্তা পার ছয়ে গরীব লোকের ছোট ছোট কুড়েঘর। তারই একটীর সামনে আমরা এসে দাঁড়ালাম । বাড়ীর বাইরেটা শ্ৰীহীন, জানালায় কাচ বসানো নেই। একটী স্ত্রীলোক এসে দোর খুলে দিলে। বেলিফের প্রশ্ন শুনে বললে, থাকার যায়গা সে দিতে পারে না-আমি কি তার ছেলের সঙ্গে এক ঘরে শুতে পারব ? তার ছেলেও ওই ফাৰ্ম্মেই কাজ করে। আমি বললাম—তাতে আমার কষ্ট হবে না। তুমি कि cन८ ? স্ত্রীলোকটী একটু ইতস্ততঃ করে বললে-আমার ছেলে যা দেয়-তাই তুমি দিও, সতেরো শিলিং। বেলিফ পথে আসতে আসতে আমায় বললে—তুমি কোন কাপড় পুরে কাজ করবে ? অন্য কোন পোষাক ख्षांप्छ cछांभांड्रा ? এখানেই গোলমাল বাধল। আমার আর কোনো পোষাক নেই, অথচ গোরু-সেবার কাজে থাকলে এ কাপড়-চোপড় ময়লা হয়ে যাবে। কুড়ি শিলিংএর কম। আর এক প্ৰস্থ পোষাক হবে না। কুড়ি শিলিং জমাতে জমাতে গ্রীষ্মকাল কেটে যাবে । সুতরাং কাজ পেয়েও ছাড়তে হ’ল-আবার আমি পথে বেরিয়ে পড়লাম । নানা গ্রামের মধ্য দিয়ে চলেছি। এ সব গ্রামে সবাই গরীব । ক্ৰমে আমি ওরাসষ্টার সহরে পৌঁছলাম। সহরের পাশেই সেভান নদী ও ঘোড়দৌড়ের মাঠ। একজন যুবক জিজ্ঞাসা করলে, আমি থাকবার ঘর খুঁজছি কি না। তার ভগ্নীর বাড়ীতে একটা ঘর ভাড়া দেবে। তার পর সে বললে-আমায় কিছু সাহায্য কর না ? সাত মাস আমার চাকুরী নেই, ছেলেপুলে নিয়ে বড় কষ্ট পাচ্ছি। ওই দেখ আমার স্ত্রী-কাছেই একটা ছোট ঘরের দরজায় একটী স্ত্রীলোক বসে ছিল- তার কোলে একটী শিশু এবং তার চারি ধারে মলিন পোষাক পরণে ছেলেমেয়ের দল খেলা করে বেড়াচ্ছে। ষ্ট্রটফোর্ড-অন-অ্যাভন ; সেক্সপীয়ারের সমাধি-প্ৰস্তুর ।