পাতা:বিচিত্র জগৎ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উত্তর-আমেরিকা হইতে দক্ষিণ-আমেরিকা \უ62 কিন্তু কলম্বসের আমলের পোটো-রিকো এখন নবীন যুগের সভ্যতার স্রোতে নিজেকে ভাসিয়েছে। এখানেও আমেরিকান সিনেমা, মুষ্টিযুদ্ধের স্থান, খবরের কাগজের ক্যামেরাওয়ালাদের ভিড়, রিপোর্টারদের ভিড়-যুক্তরাজ্যের যে কোনো সহরের সব উৎপাতই আছে। দুঃখ হয় এই যে, জাতিটা এক ছাঁচে ঢালাই করা হচ্ছে, এর প্রাচীনত্ব আর রইল না । কৃষি এখানকার লোকের জীবিকানিৰ্বাহের প্রধান উপায়। সাধারণতঃ আনারস, আমি ও তামাকের চাষই বেশী। এদেশে ধান হয় না, কিন্তু চাউলই এখানকার প্রধান খাদ্য। মাংস অত্যন্ত দুপ্রাপ্য। বিদেশ থেকে আমদানী শুষ্ক কড, মাছ বাজারে যথেষ্ট পাওয়া যায় । চাউলও বিদেশ থেকে আসে। এজন্য খাদ্য এখানে সস্তা নয়, অথচ মজুরীর হার সস্তা। পোর্টে-রিকোর প্রধান সমস্যাই এখন দাঁড়িয়েছে এই। প্ৰাতঃকালের মেঘরাশি ভেদ করে আমাদের জাহাজ উড়ল। পাশাপাশি তিনটি দ্বীপ, সেণ্ট টমাস, সেণ্ট জন, সেন্ট ক্রোয়া-ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের তিনটি শস্যশ্যামল স্থান। সেণ্ট ক্ৰোয় বিখ্যাত স্থান, আলেকজাণ্ডার স্থামিলটন এখানে বাল্যকাল কাটিয়েছিলেন এবং বন্দরের জেটিতে প্ৰথম যৌবনে কেরাণীগিরি করতেন। সারাদিনই মেঘ ও ঝড়, মাঝে মাঝে বৃষ্টি । মাটিনিক দ্বীপের কাছাকাছি যেতে ছিন্ন-ভিন্ন মেঘপুঞ্জের মধ্যে সান্ধ্য সূৰ্য্য দেখা দিলে এবং রামধনু আমাদের সঙ্গে লুকোচুরি शृंङ्गांठ क्रांतांब्न ! দূরে মণ্ট পিলি আগ্নেয়গিরির চুড়া দৃষ্টিগোচর হ’ল। যেন এক হিংস্ৰ দৈত্য চক্রবালরেখায় মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে। মণ্ট পিলির শীতল ও জমাট লাভাস্রোতের নীচে সেণ্ট দিয়ের সহর চাপা পড়ে আছে। ১৯০২ সালে মণ্ট পিলির অগ্ন্যুৎপাতে এই সহরটি ংসস্তাপে পরিণত হয় এবং ত্ৰিশ হাজার লোক মারা পড়ে, একথা অবশ্য পুরাতন ইতিহাস। কিন্তু মণ্ট পিলির টু নিম্ভান্ডের প্রসিদ্ধ পিচফ্রদ : তিন বিঘা জমির অধিক স্বান বিকৃত এই শিখরদেশস্থ অগ্নিকটাহে ভীম। ভৈরব মূৰ্ত্তি সেই পুরাতন হ্রদ YYO BDDDBY gY Ku BBDD দুৰ্দ্ধৈবের কাহিনী আমাদের স্মরণ করিয়ে দিলে। পাইলট হকিনসের পরিচালনায় উড়ো-জাহাজ মণ্ট পিলির শিখরের উপরে চক্রাকারে ঘুরতে লাগল এবং সেই সময় আমরা তার ফটো নিলাম। পরদিন আমরা সেণ্ট লুসিয়া সহরে গভর্ণরের বাড়ীতে যখন চা পান করছি, তখন বহুদূর পশ্চিমে মণ্ট পিলির শিপর অস্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি মণ্ট পিলির আগ্নেয় গহবর আবার জেগেছে, রাত্রে প্রায়ই দোয় বার হতে দেখা যায়। ট্ৰিনিডাডের পথে রওনা হবার সময় মণ্ট পিলির এই ঈষৎ অস্পষ্ট ও সম্ভবতঃ ধূমায়মান শিখর রোমান ঐতিহাসিক প্লিনি ও পম্পেয়াই-এর ধ্বংসের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিলে। ট্ৰিনিডাড় বন্দরে পৃথিবীর সকল জাতি এসে ব্যবসা বাণিজ্য করছে। হিন্দু, চীনা ম্যান, আমেরিকান, ইংরেজ, নিগ্রো, ইণ্ডিয়ান ট্ৰিনিডাডের রাজপথে এরা প্রতিদিনের পথিক । সহরের বাইরে কোকো আর কাফির বড় বড় ক্ষেত। বড় বড় তাল জাতীয় গাছ, বাতাসে তাদের পাতা খড়, খড়, শব্দ করছে। তার নীচে চীনা মেয়ের হকি খেলছে,