কেন? কেন সে দম্ভ করিয়া বারবার এ কথা বলিতেছে, আমি জড় নহি, উদ্ভিদ্ নহি, পশু নহি, আমি মানুষ,–আমি কেবল কাজ করি ও সমালোচনা করি, শাসন করি ও বিদ্রোহ করি! কেন সে এ কথা বলে না,আমি সমস্তই, সকলের সঙ্গেই আমার অবারিত যোগ আছে—স্বাতন্ত্র্যের ধ্বজা আমার নহে!
হায়রে সমাজদাঁড়ের পাখি! আকাশের নীল আজ বিরহিণীর চোখদুটির মতো স্বপ্নাবিষ্ট, পাতার সবুজ আজ তরুণীর কপোলর মতো নবীন, বসন্তের বাতাস আজ মিলনের আগ্রহের মতো চঞ্চল—তবু তোর পাখা দুটা আজ বন্ধ, তবু তোর পায়ে অজ কর্ম্মের শিকল ঝনঝন্ করিয়া বাজিতেছে—এই কি মানবজন্ম!
মন্দির
উড়িষ্যায় ভুবনেশ্বরের মন্দির যখন প্রথম দেখিলাম, তখন মনে হইল, একটা যেন কী নূতন গ্রন্থ পাঠ করিলাম। বেশ বুঝিলাম, এই পাথরগুলির মধ্যে কথা আছে; সে কথা বহু শতাব্দী হইতে স্তম্ভিত বলিয়া মূক বলিয়া, হৃদয়ে আরো যেন বেশি করিয়া আঘাত করে।
ঋক্-রচয়িতা ঋষি ছন্দে মন্ত্ররচনা করিয়া গিয়াছেন, এই মন্দিরও পাথরের মন্ত্র; হৃদয়ের কথা দৃষ্টিগোচর হইয়া আকাশ জুড়িয়া দাঁড়াইয়াছে।
মানুষের হৃদয় এখানে কী কথা গাঁথিয়াছে? ভক্তি কী রহস্য প্রকাশ