পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চিঠির টুক্‌রি
১৬৩

দিয়েছে তার কারণ এই; অশ্লীলতা অতি সহজেই প্রবলবেগে মনকে আঘাত করে—যাদের সময় নেই ও শক্তি কম তাদের পক্ষে অতি দ্রুতবেগে আমোদ পাবার এই অতি সস্তা উপায়। তীব্র উত্তেজনা চাই। সেই মনেরই পক্ষে যেমন নির্জীব—মনের জীবনীশক্তি ক’মে গেছে অগভীর মাটিতে—তার শিকড়গুলি উপবাসী।


৪ শ্রাবণ, ১৩৩৬

 আমার চিঠিগুলো চিঠি নয় এই তর্ক উঠেছে। আমি নিজে অনেকবার স্বীকার করেছি যে আমি চিঠি লিখতে পারিনে। এটা গর্ব্ব করবার কথা নয়। আমরা যে-জগতে বাস করি সেখানে কেবল যে চিন্তা করবার কিম্বা কল্পনা করবার বিষয় আছে তা নয়। সেখানকার অনেকটা অংশই ঘটনার ধারা; অন্তত যেটা আমাদের চোখে পড়ে, সেটা একটা ব্যাপার; সে কেবল হচ্চে, চলছে, আসছে যাচ্চে; অস্তিত্বের সদর রাস্তা দিয়ে চলাচল, তার ভিতরকার সব আসল খবর আমাদের নজরে পড়ে না। মাঝে মাঝে যদি বা পড়ে, তাদের ধরে রাখিনে, পথ ছেড়ে দিই; সমস্ত ধরতে গেলে মনের বোঝ অসহ্য ভারী হয়ে উঠত। আমাদের ঘরের ভিতর দিকটাতে সংসারের সঙ্কীর্ণ দেয়াল-ঘেরা সীমানার মধ্যে আমাদের অনেক ভাবনার বিষয়, অনেক চেষ্টার বিষয় আছে তার ভার আমাদের বহন করতে হয়। কিন্তু যখন জানলায় এসে বসি তখন রাস্তায় দেখি চলাচলের চেহারা। ভালো ক’রে যদি খোঁজ নিতে পারতুম তাহোলে দেখতুম তার কোনো অংশই বস্তুত হাল্‌কা নয়,—