পাতা:বিচিত্র প্রবন্ধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নববর্ষা
৪৯

মৃত্যুকেও লঙ্ঘন করিয়া গল্পের যেখানে যথার্থ বিরাম, সেখানে স্নেহময় সুমিষ্টস্বরে শুনিতাম—

আমার কথাটি ফুরোলো,
নটে গাছটি মুড়োলো।

 এখন বয়স হইয়াছে, এখন গল্পের ঠিক মাঝখানটাতে হঠাৎ থামিয়া গিয়া একটা নিষ্ঠুর কঠিন কণ্ঠে শুনিতে পাই—

আমার কথাটি ফুরোলো না,
নটে গাছটি মুড়োলো না।
কেনরে নটে মুড়োলি নে কেন,
তোর গরুতে -

 দুর হৌক গে, ঐ নিরীহ প্রাণীটির নাম করিয়া কাজ নাই, আবার কে কোন দিক হইতে গায়ে পাতিয়া লইবে।

 ১৩০০ আষাঢ়


নববর্ষা

যৌবনে নিজের অন্ত পাই নই, সংসারেরও অন্ত ছিল না। আমি কী যে হইব, না হইব, কী করিতে পারি, না পারি, কাজে ভাবে অনুভাবে আমার প্রকৃতির দৌড় কতদূর, তাহা নির্দ্দিষ্ট হয় নাই, সংসারও অনির্দ্দিষ্ট রহস্যপূর্ণ ছিল। এখন নিজের সম্বন্ধে সকল সম্ভাবনার সীমায় আসিয়া পৌছিয়াছি; পৃথিবীও সেই সঙ্গে সঙ্কুচিত হইয়া গেছে। এখন ইহা আমারি আপিসঘর বৈঠকখানা, দরদালানের সামিল হইয়া পড়িয়াছে। সেই ভাবেই পৃথিবী এত বেশি অভ্যস্ত পরিচিত হইয়াছে যে, ভুলিয়া